শিশু শিক্ষার্থীরা ধর্ষিত হচ্ছে অথচ এসব ধর্ষণের বিচার দ্রুত শেষ হচ্ছে না; এটা খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এসব বিচার দ্রুত শেষ না করা হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
Advertisement
ধর্ষণ মামলার আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
দেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোতে বিচারাধীন ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা মামলার বিচারকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে তাগিদসহ সাত-দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদালত আদেশে বলেছেন, সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাত-দফা নির্দেশনা দেয়া হলো।
এর জন্য সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সবধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, তিন-চার বছর বয়সী দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিশুরা ধর্ষিত হচ্ছে অথচ এসব ধর্ষণের বিচার দ্রুত শেষ হচ্ছে না এটা খুবই দুঃখজনক। এসব বিচার দ্রুত শেষ না করা হতাশাজনকও।
Advertisement
আদালত বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে না পারলে আইন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে বিচারকদের। কিন্তু তারা তা করছে না। এ কারণে এর আগে আমরা একটি আদেশ দিয়েছিলাম। তারপরও তারা সুপ্রিম কোর্টকে অবহিত করছে না।
আদালত বলেন, কোনো ক্ষেত্রে যদি কোনো বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয় তবে দেখা যায়, তারা সরাসরি চলে আসেন। মন্ত্রণালয়ে তদবির করেন। তারা হাইকোর্টের কাছে জবাবদিহি করতে চান না। মনে হয়, তারা মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকতে পছন্দ করেন। তা হলে বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের উদ্দেশ্য কী ছিল?
মামলায় হাইকোর্টের সাত-দফা নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দেয়ার কিছুক্ষণ পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হন। সে সময় আদালত আদেশের তথ্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে অবহিত করেন।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এসব ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে বিচারের জন্য একজন বিচারক স্ট্যান্ডবাই থাকবেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ভিকটিমকে মেডিকেল অফিসারের কাছে তিনি নিয়ে যাবেন। এরপর রিপোর্টের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক বিচার করে ফেলতে হবে। দ্রুতবিচার ছাড়া এ জাতীয় প্রবণতা কমানো যাবে না।
Advertisement
আদালত বলেন, একটি ইয়ং মেয়ে বা শিশু ভিকটিম হবে। আর বিচার বিলম্বিত হবে তা হতে পারে না। ভিকটিমের তো একটা ভবিষ্যৎ রয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেলের উল্লিখিত মন্তব্যের পর আদালত বিচারকদের অনীহা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এফএইচ/বিএ