দেশজুড়ে

দুই মিনিটে চট্টলা এক্সপ্রেসের কারণে তিন দুর্ঘটনা

ভৈরব রেলস্টেশনে বিরতির সময় দুর্ঘটনা ঘটালো ঢাকা-চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি দুপুর ৩টা ২৩ মিনিটে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে বিরতি দেয় এবং দুই মিনিট বিরতির পর ট্রেনটি ৩টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে যায়। এত কম সময়ের মধ্য তাড়াহুড়া করে ট্রেনে উঠতে গিয়ে জানু বেগম (৩৫) নামে এক নারী যাত্রী ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

Advertisement

নিহত জানু বেগম কিশোরগঞ্জের মিটামইন থানার আমানপুর গ্রামের মইজউদ্দিনের স্ত্রী। তার মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব রেলওয়ে পুলিশ।

অপরদিকে মাহমুদা বেগম নামে নামে এক নারী যাত্রী ভিড়ের মধ্য ট্রেনে ওঠার সময় রেলস্টেশনে দাড়াঁনো অপরিচিতি এক নারীর কাছে তার কোলের শিশুটি দিয়ে ট্রেনে ওঠেন। এ সময় ওই নারীকে মাহমুদা বলেছিলেন ট্রেনে ওঠার পর জানালা দিয়ে তার শিশুটিকে দিতে। কিন্ত মাহমুদা ট্রেনের ভেতরে ঢুকার পরই ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। পরে অপরিচিতি ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। শিশুটির মা ট্রেনের ভেতর কান্নাকাটি শুরু করেন। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে ট্রেনটি বিরতি দিলে মাহমুদা ট্রেন থেকে নেমে বাসে ভৈরব এসে শিশুটিকে ফিরে পান।

এছাড়াও চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটির দুই মিনিটের বিরতিতে আজ প্রায় অর্ধশত যাত্রী টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক যাত্রী ট্রেন থেকে নামতেও পারেননি।

Advertisement

জসীম মিয়া নামে এক যাত্রীর অভিযোগ, আজ তার পরিবারসহ ফেনী যাওয়ার কথা ছিল। তিনি তিনটি টিকিটও কিনেন। কিন্ত ট্রেনে উঠতে না পেরে যেতে পারেননি।

আমেনা বেগম নামে এক নারী যাত্রীও একই অভিযোগ করেছেন। ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ওই নারীর এক আত্মীয় মো. আজাদ মিয়া বলেন, ট্রেনটি থামল আর ছেড়ে দিল। তাড়াহুড়া করে আমার বন্ধুর মা ট্রেনে উঠতে গিয়ে ট্রেনের চাকার নিচে পড়ে নিহত হয়েছেন। আজ আমিসহ অসংখ্য যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারেনি।

ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের কেবিন মাস্টার মাহবুব হোসেন জানান, চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে ৩টা ২৩ মিনিটে বিরতি দিয়ে ৩টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে যায়।

এতো কম সময়ের বিরতিতে যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার দেখার বিষয় নয়। ভৈরবে দুই মিনিট বিরতির সিডিউল দেয়া আছে তাই নির্ধারিত সময় আমাকে ট্রেন ছাড়ার সিগনাল দিতেই হবে।

Advertisement

ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. কামরুজ্জামান জানান, ভৈরবে বিরতির সময় দুই মিনিট। তবে ট্রেনের গার্ড যাত্রীর ভিড় দেখার পর ট্রেন ছাড়ার সিগনাল কিছুটা পরে দিতে পারতেন। তিনি কেন সিগনাল পরে দিলেন না সেটা তার বিষয়। ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন থেকে আজ প্রায় অর্ধশত যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারেননি বলে তিনি স্বীকার করেন।

নারী যাত্রী নিহতের ঘটনায় তিনি বলেন, তাড়াহুড়া না করলে ওই নারীর মৃত্যু হতো না।

ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ জানান, চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরবে মাত্র দুই মিনিট বিরতি দেয়। অথচ এই রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০/২০০ যাত্রী ট্রেনে ওঠানামা করে। দুই মিনিট সময়ে এত যাত্রী ওঠানামা করা সম্ভব নয়। আজকের দুর্ঘটনাটি কম বিরতির কারণেই ঘটেছে।

আসাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর/এমকেএইচ