মাঠ প্রশাসন দুর্নীতিমুক্ত করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। একইসঙ্গে কোনো ভোগান্তি ছাড়া জনগণ যাতে সেবা পায় তা নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
Advertisement
বুধবার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের চতুর্থ দিনের সপ্তম অধিবেশন শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের এ কার্য অধিবেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গণশুনানি আরও কত চৎকারভাবে করতে পারি সেটা বলেছি। বলেছি কোনো কর্মকর্তার যদি কোনো ত্রুটি থাকে, তাদের ডেকে নিয়ে মাঝে মাঝে বসে কীভাবে সংশোধন করে দেয়া যায়, সেই বিষয়ে বলেছি।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘অফিসগুলোকে আমরা পুরোদমে ডিজিটালাইজড করতে পারি, সেই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। জেলা হাসপাতালগুলোকে দালাল ও দুর্নীতি-অনিয়মমুক্ত করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছি। পাসপোর্ট অফিসে তাদের নজরদারি আরও বাড়াবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নজরদারি বাড়ানো, লেখাপড়ার মান উন্নয়নে তারা যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করে, সেজন্য আমরা নির্দেশ দিয়েছি।’
জেলা-উপজেলার সরকারি অফিসে সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনও মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, সেক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চেয়েছেন কি না- জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘অবশ্যই অগ্রগতি দেখতে চেয়েছি। আমরা বলেছি যেখানে অনিয়ম তা প্রথমে শনাক্ত করা প্রয়োজন। সেক্ষত্রে আমরা জানি কিছু কিছু জায়গা আছে। যেরকম আছে আমাদের এসি ল্যান্ডের অফিসে, আমি বলেছি- মিউটেশন বা নাম খারিজ করার জন্য বিষয়গুলো আরও দ্রুততার সাথে কীভাবে করতে পারি। সেটা ডিজিটালাইজেশনের ব্যবস্থা আমরা দ্রুত করতে পারি, সেজন্য তারা নজর দেবেন ও বলবেন।’
‘কোন কর্মকর্তা দুর্নীতি বা অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকলে, তাদের তলব করবেন, বলবেন। প্রথমে সংশোধন করার চেষ্টা করবেন। আর যদি না হয় অবশ্যই আমাদের যে বিভাগীয় ব্যবস্থা, আইনগত ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করবেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এক জেলার কর্মকাণ্ড এবং আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা আরেকটি জেলা থেকে ভিন্ন, সেই জেলার বৈশিষ্ট বিবেচনা করে যাতে আরও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড জেলা প্রশাসকরা নিতে পারেন সেজন্য প্রস্তাব দেবেন। এলাকার উন্নয়নের জন্য আরও ভালো কিছু প্রকল্প গ্রহণ করতে তারা যাতে সহযোগিতা করেন।’
Advertisement
‘জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা একটি ব্যাংক করতে পারি কি না সেটা তারা (ডিসি) প্রস্তাব দিয়েছেন। সেটা আমরা বিবেচনা করবো বলেছি। মোট ২৬টি প্রশ্ন তারা করেছেন। গাড়ির তেল বরাদ্দের সীমা আরেকটু ওপরে ওঠানো যায় কি না, সেটা বলেছেন। একেবারে নিচের পদগুলোর পদোন্নতির ব্যবস্থা করা যায় কি না, এমন নানা ধরনের প্রশ্ন তারা করেছেন। যেগুলো যৌক্তিক আমরা সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো বলে জানিয়েছি।’
সরকারের সব দফতর যদি এভাবে ব্যাংক চায় সেটা যৌক্তিক কি না- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চাইতেই পারে। যেকোনো সংস্থা চাইতেই পারে। চাওয়ার অধিকার আছে। জনপ্রশাসনের ৫ হাজার কর্মকর্তা কাজ করছেন। এছাড়া যারা সাবেক আছেন, তারাও সম্পৃক্ত হতে পারেন। যদি দেশের জন্য কল্যাণকর হয়, সেটা অবশ্যই করা যাবে। আর যদি কল্যাণকর না হয় সেটা বিবেচনার দায়-দায়িত্ব সরকারের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য কিছু নির্দেশনা ছিল- আমরা চেয়েছি গত নির্বাচনে সরকারের ইশতেহারে ছিল যে আমরা দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসন গড়ে তুলবো। জনকল্যাণমুখী জনপ্রশাসন গড়ে তুলব। সেই কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করেছি। গত ১০ বছরে এই সরকার মাঠ পর্যায়ে জনপ্রশাসনকে জনগণের খুব কাছাকাছি নিয়ে গেছে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ডিসিদের অফিসগুলো সুন্দর করে সাজিয়েছি। তাদের লজিস্টিক সাপোর্ট ইতোমধ্যে দিয়েছি, আর কিছু আমরা দিচ্ছি। আরও কিছু দিচ্ছি। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনেক বেড়ে গেছে সেজন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাজ অনেক বেড়ে গেছে।’
আরএমএম/এনএফ/জেআইএম