দেশজুড়ে

সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

যমুনাসহ সিরাজগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ হুড়াসাগর নদীর পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাড়ছে ফুলজোড় ও করতোয়া নদের পানিও। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার লাখো মানুষ।

Advertisement

এদিকে নদ-নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম। এতে বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার, কাজিপুর পয়েন্টে ১১৫ সেন্টিমিটার এবং শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি পয়েন্টে হুড়াসাগর নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার নদীবেষ্টিত অঞ্চলগুলোর ২২ হাজার ২১২টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের প্রায় দেড় লাখ মানুষ।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে কাজিপুর উপজেলায় মেঘাই আটাপাড়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ রিং বাঁধ ধসে মেঘাই, নতুন মেঘাই, পাইকরতলী, পলাশবাড়ী ও আটাপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এসব এলাকার স্কুল ও মাদরাসায় পানি ঢুকে পড়েছে। ডুবে গেছে কাজিপুর-ধুনট রাস্তার প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ। পরে রাতেই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ওই এলাকার মানুষের জানমাল উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনেন।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রণজিত কুমার সরকার জানান, যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এতে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে পানি কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুল হক বলেন, জেলার প্রায় ৬ হাজার ৪শ হেক্টর জমির পাট, রোপা আমন, আউশ ও সবজির ক্ষেতে পানি উঠেছে। তবে এখনও কোনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, যমুনার পানি বাড়ার কারণে চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত পাঁচ উপজেলার ৯৯০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের ২২ হাজার ৩৪৯টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৪৯৪ টন চাল ও ৮ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে এগুলো বিতরণ শুরু করা হবে।

Advertisement

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এমএমজেড/জেআইএম