ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও সরাইল উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় মেঘনা নদীতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার ঘোষণা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছেনা কোনো ঠিকাদার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়মিত ঠিকাদাররা লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। ভাঙনের কারণে বিলীন হতে বসেছে নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় বাজার ও সরাইল উপজেলার পানিশ্বর বাজার। এ অবস্থায় খোদ পানি উন্নয়ন বোর্ডও বিপাকে পড়েছে নদী ভাঙন রোধের কাজ নিয়ে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের তিনশত বছরের পুরনো চাতলপাড় বাজারে গত কয়েক বছর ধরে মেঘনা নদীতে ভাঙন চলছে। গেল বছর ও চলমান বর্ষায় বাজারের শতাধিক দোকানঘর মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে নিস্ব হয়ে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। একইভাবে সরাইল উপজেলার দেড়শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাজার পানিশ্বর বাজারের। গত সাত-আট বছর ধরেই মেঘনা গ্রাস করে নিয়েছে বাজারের অনেক অংশ। ভয়াবহ এ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড মেঘনার পাড়ে প্রাথমিক প্রতিরক্ষা হিসেবে ‘জিও ব্যাগ’ দিয়ে বালি ফেলার উদ্যোগ নেয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিভাগ ঐতিহ্যবাহী ওই দুই বাজারের ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করার জন্য কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বিভাগের তত্ত্বাবধায়কের কাছে চিঠি লিখে। গত ৩০ জুন কুমিল্লা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বাজার দুটির কাজে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। সেই অনুসারে চাতলপাড় বাজারে ভাঙন রোধের জন্য ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে চার হাজার ৪২৫ বস্তা এবং পানিশ্বর বাজারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় হাজার ৬৩৮ বস্তা বালি ফেলার কথা বলা হয়। এসব ‘জিও ব্যাগে’ বালি ভর্তি করে সেলাই করে নদীতে ফেলার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌর পদ সূত্রধর স্থানীয় ঠিকাদারদের ডেকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ দুটি সম্পন্ন করার অনুরোধ করেন। তবে লোকসানের অজুহাতে গত ১৫ দিনেও কোনো ঠিকাদার কাজ করেত রাজি হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌর পদ সূত্রধর জাগো নিউজকে বলেন, বাজার দুটির কাজ জরুরি ঘোষণার পর আমরা ডিপিএম পদ্ধতিতে ঠিকাদারদের ডেকে কাজ করার কথা বলেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ঠিকাদারই কাজ করেত রাজি হয়নি। কেউ কেউ বলছেন কাজগুলোতে তাদের লোকসান হবে আবার কেউ বলছেন এ কাজে তারা অভিজ্ঞ না।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমরা ঠিকাদারদের জন্য ১০ ভাগ লাভ ধরে রেখেছি। জরুরি ভিত্তিতে কাজ দুটি সম্পন্ন করা না গেলে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হবে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বিভাগের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাঈমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আলী আজম জানান, পানি উন্নয়ন বিভাগ অনেক পুরনো রেটে প্রাক্কলন করায় কেউ কাজ করতে চাইছে না। কাজটি করলে লোকসান নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে।
আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এমএস
Advertisement