আন্তর্জাতিক

৭১ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষে একই দিনে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

সম্পর্ক নাকি বোঝাপড়ার ব্যাপার। তাই বলে একইদিনে প্রেমিক-প্রেমিকা মৃত্যুবরণ করবেন এটা অনেকটা বিরল ঘটনা। আর প্রেমিক যুগল যদি ৭১ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর একইদিনে মারা যান তাহলে তো সেটা আরও আশ্চর্যের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে যা আপনার মনকে শীতল এবং একইসঙ্গে উষ্ণ করে তুলবে।

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের দম্পতি হারবার্ট ডিলেইগলি এবং ম্যারিলিন ফ্রান্সিস ডিলেইগলি। স্বামীর বয়স ৯৪ আর স্ত্রীর ৮৮ বছর। গত শুক্রবার এই দম্পতি একই দিনে মারা গেছেন। এই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাদের দীর্ঘ আট দশকের দাম্পত্য জীবনের অবসান হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, আজ থেকে ৭২ বছর আগে একটি কফিশপে তাদের পরিচয়। এক বছর প্রেম করার পর বিয়ে করেন তারা। টানা ৭১ বছর দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর একইদিনে তারা মৃত্যুবরণ করেছেন।

২০১৮ সালে সিএনএনে দেয়া এক স্বাক্ষাতকারে স্বামী হারবার্ট ডিলেইগলি বলেন, ‘ফ্রান্সিস (তার স্ত্রী) ভার্জিনিয়ার ওয়ানসবোরোর একটি ছোট্ট কফিশপে কাজ করতো। আমি তাকে একদিন দেখি। তারপর থেকে আমি তাকে দেখার জন্যই সেখানে যেতাম। শেষে একদিন আমি তাকে বললাম যদি তার সুযোগ হয় তাহলে বাইরে কোথাও একটু সময় কাটাতে চাই।’

Advertisement

সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওই দম্পতি জানান, হারবার্ট সাহস করে যেদিন ফ্রান্সিসকে ওই কথা বলেন সেদিন কিছু না হলেও তার কয়েকদিন পর তারা সিনেমা দেখতে যায়। আর এর মাধ্যমে শুরু হয় তাদের প্রেম। এক বছর প্রেম করার পর একদিন হারবার্ট বিয়ের প্রস্তাব দিলে রাজি হয় ফ্রান্সিস।

তারপর থেকেই একসঙ্গে তারা। গত শুক্রবার ওই দম্পতি মারা যায়। তবে টানা ৭১ বছর একসাথে থাকার পর একইদিনে মৃত্যু হলেও সময়টা ছিল ভিন্ন। স্ত্রী ফ্রান্সিস মারা যাওয়ার ঠিক বারো ঘন্টা পর স্বামী হারবার্টও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্বামী হারবার্টের সঙ্গে ছয় বছর জার্মানিতে ছিলেন ফ্রান্সিস। এ ছাড়া তার স্বামী হারবার্ট কোরিয়া এবং ভিয়েতনামেও মার্কিন সেনা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। টানা ২২ বছরের সামরিক জীবন শেষে অবসর নেন তিনি।

হারবার্ট-ফ্রান্সিস দম্পতি ছয়টি সন্তান রেখে গেছেন। তাদের নাতি-নাতনি আছে ১৬ জন। এ ছাড়া তাদের সন্তানদেরও নাতি-নাতনি আছে ২৫ জন। আর এই দম্পতির যে নাতি-নাতনি আছে তাদেরও তিনজন নাতি-নাতনি আছে। সোমবার তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

Advertisement

এসএ/পিআর