প্রতিবছরই বিভিন্ন এলাকা বন্যায় আক্রান্ত হয়। এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ফসলের। ফলে প্লাবিত অঞ্চলের মানুষ দুর্বিষহ জীবন কাটায়। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে ফসল রক্ষা করতে প্রস্তুতি নিতে হয়। বন্যা বাড়ার সাথে সাথে কিছু করণীয় সম্পর্কে জানতে হয়। তাই জেনে নিন বন্যায় ফসলের ক্ষতি মোকাবেলার ১২ উপায়-
Advertisement
১. বন্যা দেখামাত্র কৃষি উপকরণ বিশেষ করে বীজ, সার, কৃষি যন্ত্রপাতি উঁচু নিরাপদ স্থানে ভালোভাবে রাখতে হবে।
২. বন্যামুক্ত উঁচু জায়গায় বীজতলা তৈরি করা দরকার। উঁচু জায়গা না হলে কলাগাছের ভেলা বা চাটাইয়ের উপর ভাসমান বীজতলা তৈরি করে রাখা যায়।
৩. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চারার পাতায় পলিমাটি লেগে থাকলে পানি ছিটিয়ে তা ধুয়ে দিতে হবে। বন্যার পর বেঁচে যাওয়া চারা দ্রুত বাড়ার জন্য ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা ভালো।
Advertisement
৪. জমির ভালো জায়গার সুস্থ চারা থেকে কিছু চারা তুলে ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে হবে। পানি সরে যাওয়ার পর চারার পাতা ৮-১০ সেন্টিমিটার আগা কেটে বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে।
> আরও পড়ুন- জনপ্রিয় হচ্ছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ
৫. পাটগাছের ডগা কেটে মাটিতে পুঁতে দেওয়া। পরে এগুলো থেকে নতুন ডালপালা বের হলে তা থেকে মানসম্মত বীজ উৎপাদন করা যায়।
৬. বন্যার পানি নেমে গেলে বিনা চাষে গিমাকলমি, লালশাক, ডাঁটা, পালং, পুঁই, ধনে, ভুট্টা, সরিষা, মাসকলাই, খেসারি, আলু চাষ করা যায়।
Advertisement
৭. বন্যার সময় টব, মাটির চাড়ি, কাঠের বাক্স, কাটা ড্রাম, পুরোনো টিন, পলিব্যাগ ও কলার ভেলায় ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, লাউ ও মরিচের চারা উৎপাদন করা যায়।
৮. আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত শাকসবজি ও অন্যান্য ফসলি জমির রস কমানোর জন্য মাটি আলগা করে ছাই মিশিয়ে দেওয়া এবং স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ইউরিয়া ও পটাশ সার প্রয়োগ করা উচিত।
৯. রোপিত ফলের চারার গোড়ার পানি নিকাশের জন্য নালার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে গোড়ায় মাটি দিয়ে সোজা করে খুঁটির সাথে বেঁধে নেওয়া যায়। গোড়ার মাটি শুকালে পরিমাণমতো সার দিতে হবে।
> আরও পড়ুন- বছরের ৬ মাস পানির নিচে যে এলাকা
১০. বন্যার পর জমিতে জো আসা মাত্রই চাষ ও মই দিয়ে অথবা বিনা চাষে ডিবলিং পদ্ধতিতে তুলা বীজ বপন করা যায়। পলিব্যাগে বা বীজতলায় তুলা বীজের চারা তৈরি করা যায়। পানি নেমে গেলে ইউরিয়া ও পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে।
১১. আখের জমি বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আগে গোড়ায় মাটি দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে দিতে হবে। পানির স্রোতে আখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে যথাসময়ে জমির আইলে ধৈঞ্চার বীজ বুনে দেওয়া ভালো।
১২. পুরাতন পাতা এবং প্রতি ঝাড়ে ৫-৬টি সুস্থ কুশি রেখে অতিরিক্ত কুশি কেটে দিতে হবে। পানি নেমে যাওয়ার পর আখগাছ ঢলে পড়লে গাছের ঝাড় মুঠি করে বেঁধে দিতে হবে।
এসইউ/এমএস