‘স্যার, রিকশাডা আইজকার মতো ছাইড়া দেন।’ সায়েন্স ল্যাবরেটরি পুলিশ বক্সের সামনে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্টকে করজোড়ে অনুরোধ করছিলেন রিকশাচালক মধ্য বয়সী আলতাফ হোসেন। তার অনুরোধ আমলে নিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট বায়েজিদের পাল্টা প্রশ্ন, এ রোডে রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, জানা আছে?
Advertisement
আলতাফ হোসেন মাথার ঘাম মুছতে মুছতে উত্তর দিলেন, ‘স্যার নিষেধ আছে জাইন্যাও পেডের জ্বালায় রিকশা লইয়া বাইর অইছি। ঘরে বউ ও চাইর-চারটা পোলাপান। একটা ভালো খ্যাপ পাইয়া রিস্ক লইয়া আইছিলাম।’
মঙ্গলবার বেলা ২টায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের চোখে এ দৃশ্য ধরা পড়ে। শুধু আলতাফ মিয়ার রিকশাই নয়, আরও তিন-চারজনের রিকশাও পুলিশ বক্স সংলগ্ন রাস্তার একপাশে উল্টে রেখে দেয়া হয়েছে। ওই রিকশাওয়ালারাও একইভাবে অনুরোধ করছিলেন। কেউ কেউ আবার ফোন করে গ্যারেজের মালিককে রিকশা আটকের তথ্য জানাচ্ছিলেন। কয়েকজন মালিক মোবাইল ফোনে অনুরোধ জানালেও পুলিশ সার্জেন্টের মন গলছিল না।
আরও পড়ুন>> রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত : চালকরা বলছেন, ‘পেটে লাথি মারবেন না’
Advertisement
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন সম্প্রতি আজিমপুর টু মিরপুর রোডসহ নগরীর বেশকিছু রাস্তায় রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ কারণেই মিরপুর রোডে রিকশা চলাচলের ওপর কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে।
পুলিশ সার্জেন্ট বায়েজিদ জানান, দরিদ্র রিকশাচালকদের রিকশা আটক করতে মন না চাইলেও, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রতিদিনই রিকশা আটক করছেন। তার এক সহকর্মী মোকাররম এ প্রতিবেদককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা যে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছি সে সম্পর্কে ভালো কিছু লেখেন।’
বায়েজিদ জানান, রিকশা গ্যারেজের মালিকরা তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাপকালে জানিয়েছেন, যে সব প্রধান সড়কে রিকশা চলাচল নিষেধ রয়েছে সেখানে না যাওয়ার জন্য বললেও রিকশাচালকরা তা শোনেনি। পরে চলে আসার সময় পুলিশ সার্জেন্ট জানান, আর এ রাস্তায় আসবেন না- এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে কিছুক্ষণ পর আটক রিকশা ছেড়ে দেবেন।
এমইউ/এমএসএইচ/এমএস
Advertisement