দুধে সিসা, কেমিক্যাল ও ক্ষতিকারক পদার্থ মিশিয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরির বিষয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, বাজারের পাস্তুরিত দুধ নিয়ে কোনো অজুহাত দেখতে চাই না, আমরা চাই বিশুদ্ধ দুধ।
Advertisement
আদালত আরও বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন অনেক বাড়ানো হয়েছে তারপরও কেন ঘুষ খেতে হবে। ঘুষের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন আদালত।
এ তথ্য জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিভিন্ন কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে সিসা, ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে এ তথ্য জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিলের পর এ মন্তব্য করেন। এর আগে পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী। তারা (নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ) আদালতকে জানান, ভেজাল দুধের বিষয়ে এখন পর্যন্ত ১০০টি মামলা হয়েছে। হাইকোর্ট বলেন, দুধে ভেজাল মোকাবিলায় ফান্ড তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে ভেজালের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে হবে। এই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো গাভীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া যাবে না বলেও আদালত বলেছেন।
Advertisement
আদালতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। এ সময় বিএসটিআই’র পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান (মামুন)। দুদকের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না এবং মো. সাইফুল আলম।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘দেশে পুষ্টির অন্যতম প্রধান জোগান হিসেবে বিবেচিত গরুর দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যে এবার মিলেছে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদান।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য প্রকাশ করে সরকারের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের প্রতিবেদনে। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ অন্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে।
পরে আদালত দুধে সিসা মিশ্রণকারীদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। রুলে দুগ্ধজাত খাবারে ভেজাল প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
Advertisement
পাশাপাশি খাদ্যে ভেজালের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়।
পাশাপাশি ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারে কোন কোন কোম্পানির দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য পণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে- তা নিরূপণ করার জন্য একটি জরিপ শেষে প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেন। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেন আদালত। এফএইচ/জেএইচ/এমএস