গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গায় চার পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার বিচার গাইবান্ধার দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুতবিচার টাইব্যুনালে স্থানান্তরের গেজেট স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত।
Advertisement
একইসঙ্গে, এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ২৫ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আদালত। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।
এই আদেশের ফলে, চার পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার বিচার গাইবান্ধার দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুতবিচার টাইব্যুনালে স্থানান্তরে আপাতত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের চেম্বারজজ আদালত এই আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।
মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করার পর ওই রায়কে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গায় চার পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার বিচার গাইবান্ধা দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করার জন্য ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করে সরকার।
এই গেজেট চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আসেন উক্ত মামলার আসামি হারুন অর রশিদ। ওই রিটের শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ সরকারের জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আবেদনের শুনানিতে চেম্বারজজ আদালত চার পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার বিচার গাইবান্ধার দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুতবিচার টাইব্যুনালে স্থানান্তরের গেজেট স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
Advertisement
এর আগে গত ৪ মার্চ এই মামলায় গাইবান্ধা জেলা জজকোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আলী আহম্মেদ অভিযোগ গঠন করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা আবদুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজকে প্রধান আসামি করে দলটির মোট ২৩২ জনের নামে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায়কে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও রেলওয়ে স্টেশনে হামলা চালিয়ে জামায়াত-শিবির কর্মীরা বাবলু মিয়া, হযরত আলী, তোজাম্মেল হক ও নাজিম উদ্দিন নামে চার পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। একই দিন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগও করা হয়। পরে এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার তৎকালীন এসআই আবু হানিফ স্থানীয় জামায়াত নেতা আবদুল আজিজসহ ৯৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২ হাজার ৫০০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।
এফএইচ/এসআর/জেআইএম