দেশের বন্যা আক্রান্ত ১৬ জেলায় ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ (আরটিআই), চোখের প্রদাহ ও চর্মরোগসহ নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। গত বুধবার (১০ জুলাই) থেকে আজ সোমবার (১৫ জুলাই) পর্যন্ত এসব এলাকায় পানিতে ডুবে, বজ্রপাতে ও ও সাপের কামড়ে মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
নিহতদের মধ্যে পানিতে ডুবে ৭ জন, বজ্রপাতে ৩ জন ও সাপের কামড়ে ২ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে মোট এক হাজার ২২৫ জন আক্রান্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন রোগে ৬৭২ জন আক্রান্ত ও একজনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশের নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, বগুড়া, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও জামালপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। গত ১০ জুলাই থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতর এই ১৬ জেলার রোগব্যাধি সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে।
Advertisement
তিনি আরও জানান, এই ১৬ জেলার ৫৩টি উপজেলার ২০৯টি ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত। এসব এলাকায় মোট আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ২৬৯টি। বর্তমানে ১৬ জেলায় এক হাজার ৫৪৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
গত ছয় দিনে আক্রান্ত জেলাগুলোতে ৪২৮ জন ডায়রিয়া, ১৮৯ জন আরটিআই, ৭ জন বজ্রপাতে, ১০ জন সাপের কামড়ে, ৪ জন পানিতে পড়ে, ১১৪ জন চর্মরোগে, ৪৯ জন চোখের প্রদাহ, ১৫ জন আঘাতপ্রাপ্ত ও অন্যান্য রোগে ৪১২ জন আক্রান্ত হন। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
পানিতে ডুবে মৃতরা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জের হাজীপুর গ্রামের শাহিনুর আলমের ৭ বছরের ছেলে মুহিত আলম, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানার চাঁপাতলা গ্রামের সেকেন্দার আলী ছেলে সুজন (১৩), নেত্রকোনার মদন থানার নুরপুর গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ৬ বছরের মেয়ে সুইটি আক্তার, একই গ্রামের মুজিবুর রহমানের ৬ বছরের শিশুকন্যা রাফিয়া আক্তার, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানা চাঁদপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ৮ বছরের শিশুপুত্র ইমাম হোসেন ও কক্সবাজারের চকরিয়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (১৯)।
সাপে কেটে মৃতরা হলেন- লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানার জগৎপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ১৫ বছরের ছেলে হাফিজুল হক ও নীলফামারীর ডিমলা থানার বাইশপুকুর গ্রামের আমিনুর রহমানের স্ত্রী মোরশেদা (৩২)।
Advertisement
বজ্রপাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানার বড়ুয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এনামুল (১৮), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মানিকশিলা গ্রামের মোহাম্মদ মিরাজ আলীর ছেলে হরিদুল (৫০) ও হরিদুলের ছেলে তারা মিয়া (১২)।
এমইউ/বিএ/এমএস