জাতীয়

‘৮ আগস্ট থেকে পোশাক শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ঈদের ছুটি’

যানজট এড়াতে আগামী ৮ আগস্ট থেকে পোশাক শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ঈদুল আজহার ছুটি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ আগস্ট দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে।

Advertisement

রোববার (১৪ জুলাই) সচিবালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘৮ আগস্ট থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়া হবে। যাতে অযথা যানজট না হয়।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করবেন বলে মালিকরা জানিয়েছেন, আমরা সেটার প্রতি খেয়াল রাখব। ঈদের আগে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না বলে আমরা তাদের অনুরোধ করেছি।’

‘আসন্ন ঈদুল আজহা উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকবে। যাতে দেশের মানুষ আনন্দের সাথে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে পারে। দেশের ঈদের জামাতগুলোতে প্রয়োজনমাফিক পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। ঈদের ছুটিতে চুরি-ডাকাতি যাতে না হয় তা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী ইউনিফর্মধারী এবং পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী সদস্যরা সবসময় থাকবেন।’

Advertisement

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঈদের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেউ কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে সবাইকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অবস্থার কথা জানাবেন, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

ঈদ সামনে রেখে কোনো নাশকতার আশঙ্কা আছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে নাশকতার কোনো সংবাদ এখন পর্যন্ত নেই। যদি হয় সে জন্য নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।’

যানজট নিরসনে রাস্তা ও রাস্তার পাশে কোনো ধরনের পশুর হাট বসবে না বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সব জায়গায় বলবৎ থাকবে আমরা সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি। বন্যার কারণে নির্দিষ্ট স্থানে হাট বসতে না পারলে ডিসি বা ইউএনও নির্ধারণ করে দেবেন কোন জায়গায় হাট হবে, যাতে রাস্তায় কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়।’

তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় যানবাহনে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া কেউ দাবি করতে পারবেন না। টার্মিনালে ভাড়ার চার্ট ঝুলিয়ে রাখতে হবে।’

Advertisement

সরকারের নির্দিষ্ট করে দেয়া স্থান ছাড়া কোরবানি দেয়া যাবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরে নির্ধারিত স্থান ছাড়া কোরবানির হাট বসতে পারবে না। সিটি কর্পোরেশনগুলো কমিশনার সাহেবের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে স্থান নির্ধারণ করবেন, ওই স্থানের বাইরে কোরবানির হাট দেয়া যাবে না।’

‘কোরো পশুবাহী গাড়ি কিংবা হাইওয়েতে কোনো লোডেড গাড়ি থামানো হবে না। নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে গাড়ি থামবে, যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়। নদীপথেও কোনো নৌযানকে আমরা থামাব না, যদি না কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকে।’

পশুর গাড়িতে চাঁদাবাজি হয়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘পশুবাহী ট্রাকের সামনে গন্তব্যের নাম ঝুলিয়ে দেয়া হবে। গাড়ি আটকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতবারও এই ব্যবস্থা ছিল। হাইওয়ে পুলিশ থেকে শুরু হবে জেলা পুলিশ এটার নজরদারি করবে।’

তিনি বলেন, ‘পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, সিসিটিভি স্থাপন, জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন থাকবে, টাকা-পয়সা পরিবহনে পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করবে। জনগণের অবগতির জন্য পশুর হাটে হাসিলের চার্ট বাধ্যতামূলকভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। পশুর হাটে অজ্ঞান পার্টি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারি থাকবে। চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।’

‘গরুর হাটে সান্ধ্যকালীন বুথ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নেবেন।’ আগামী ৯ ও ১০ আগস্ট শিল্প এলাকায় ব্যাংক খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সময় ব্যাংক খোলা থাকবে বলে আশা করি।

সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পটোয়ারী, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/বিএ/পিআর