জাতীয়

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস কঠোর হাতে দমন ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সমাজ থেকে যেকোনো মূল্যে এসব সমস্যা দূর করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য শান্তিময় একটি দেশ গড়ে তোলা।

Advertisement

আজ (রোববার) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব সফিউল আলম। অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের কাজের ওপর একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে খুলনার কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া বক্তব্য রাখেন। জেলা প্রশাসকদের পক্ষে তিনজন জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন (চট্টগ্রাম), আনারকলি মাহবুব (শেরপুর) ও মো. শহীদুল ইসলাম (টাঙ্গাইল) বক্তব্য রাখেন।

Advertisement

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আপনারা কঠোর ভূমিকা রাখবেন। এটা এখন বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। আইনশৃঙ্খলা, গোয়েন্দা সংস্থা ও দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বয় করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির স্বীকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে। মাদকসেবীরা একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। তিনি বলেন, দুর্নীতি ও ঘুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। এ ধরনের অপরাধ দমন করতে হবে। ঘুষ যে নেবে ও দেবে দুজনই সমান অপরাধী; বরং যে দেবে সে বেশি অপরাধী। এটা মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও কাছে হাত পাতি না। মাথা নত করি না। বাংলাদেশ আজ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। আমরা প্রবৃদ্ধি ৮.১ ভাগ অর্জন করে উন্নয়নের রোল মডেল হতে পেরেছি। এ উন্নয়নের পেছনে আমরা যারা সরকারে কাজ করছি, সবার অবদান আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের জমি উর্বর কিন্তু স্বল্প। পরিকল্পিতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন ৯৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। একসময় মানুষের চাহিদা ছিল পেটের খাবার। আমি গ্রামে কঙ্কালসার মানুষ দেখেছি। দেখেছি মানুষের কাপড় নেই। তাদের বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে দেওয়া হয়েছে। এখন আর সেই অবস্থা নেই।

তিনি বলেন, ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য খুলনা জেলা থেকে প্রথমে উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমি বললাম, আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো। তবে যারা পেশাদার ভিক্ষুক, তাদের আপনি এখান থেকে সরাতে পারবেন না। এদের অনেকের বাড়ি আছে, টাকা-পয়সা অনেক, তারপরও তারা ভিক্ষা করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যাতে সঠিকভাবে হয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। কোন অঞ্চলে কী কাঁচামাল উৎপাদন হয় তার ভিত্তিতে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা বিদেশে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। ভাষা শিখে তারা যেন বিদেশে যেতে পারে সে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। দালালদের খপ্পরে পড়ে যাতে মানুষ নিজেদের জীবন শেষ করে না দেয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ ছাড়া ৩০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করবেন। তাহলেই দেশের মানুষ অনেক কিছু পাবে।

এফএইচএস/এনএফ/এমএস