বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ফরিদপুরে আড়িয়াল খাঁ নদে তীব্র আকারে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে চরম আতঙ্কে রয়েছেন সদরপুরের চরমানাইর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী গ্রামের শতাধিক পরিবার।
Advertisement
নদী শাসনে কর্তৃপক্ষ আড়িয়াল খাঁর কিছু সীমানায় ভাঙনরোধে উদ্যোগ নিলেও অন্য সীমানা জুড়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। দ্রুত স্থায়ী পদক্ষেপ না নেয়া হলে ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম এ বর্ষায়ই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
ভাঙন কবলিত চরমানাইর ইউনিয়নের জাজিরাকান্দি গ্রামের গৃহবধূ কুলসুম বিবি জানান, গত বছর বর্ষা মৌসুমে বাপ-দাদার ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছিল। ভাঙনের পর যেটুকু জমি ছিল এ বছর তাও নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, চাষাবাদের জমি হারিয়ে পরিবার পরিজনসহ অন্যের জমিতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে।
Advertisement
সম্প্রতি চরমানাইর ইউনিয়নের আমিরখার কান্দি, জাজিরাকান্দি, চরবন্দরখোলা ফাজিল মাদরাসা, কাজীকান্দি, আদেল উদ্দিন মোল্যারকান্দি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ১১টি পরিবার বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চরমানাইর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী জানান, বর্ষার শুরুতেই নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিরোধের জন্য কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ও চরবন্দরখোলা মাদরাসা।
তিনি আরও জানান, ভাঙনে প্রায় দুই হাজার বিঘা ফসলি জমি আড়িয়াল খাঁয় বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া প্রায় ১১টি পরিবার বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তীব্র শ্রোতের পাশাপাশি ঝড়ো বাতাসে আড়িয়াল খাঁ নদে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল ঢেউ। এর আঘাতে ভাঙতে শুরু করেছে পাড়।
Advertisement
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু এহসান মিয়া জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূরবী গোলদার জানান, নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নদী ভাঙ্ন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সব সময়ই ভাঙন কবলিত মানুষের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
বি কে সিকদার সজল/এমএমজেড/পিআর