ডিপ্রেশন নামক শব্দটির সঙ্গে ক্রমেই আমাদের পরিচিতি বাড়ছে। কিছু বছর আগেও এটি তেমন পরিচিত ছিল না। কিন্তু আধুনিক জীবনযাপনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকা মানুষের সংখ্যাও। আগে এই ব্যাপারটিকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও বর্তমানে মানুষেরা কিছুটা সচেতন হয়েছেন। তারা প্রয়োজনে কাউন্সেলরের দ্বারস্থ হচ্ছেন। মনে রাখতে হবে, বেশিরভাগ চিকিৎসকের ধারণা, আমরা যে গতিতে ছুটছি আজকাল, জীবনে যা যা অর্জন করতে চাইছি, তার মূলেই লুকিয়ে আছে মনোরোগের বীজ।
Advertisement
এখন প্রশ্ন হলো, আপনার খুব কাছের কেউ যদি ডিপ্রেশনে ভোগেন, আপনি তখন কী করবেন? ডিপ্রেশনের শিকার হলে সেই মানুষটি নিজে থেকে সুস্থ হতে পারে না। তার প্রয়োজন পড়ে কারও না কারও সাহায্য। একটু মানসিক সমর্থন। তার কাঁধে নির্ভরতার হাত রাখা, তার পাশে থাকা। কিছুই হয়নি, তুমি ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারবে- আপনজনের দুঃসময়ে অন্তত এটুকু বলাটা আমাদের দায়িত্ব।
স্ট্রেস, কাজের চাপ, পারিবারিক সমস্যা কম-বেশি সবারই থাকে। কোনো কারণে প্রত্যাশা পূরণ না হলে ভেঙে পড়া বা কিছুদিনের জন্য মন খারাপের মতো সমস্যাও হয়। কিন্তু সেটা আবার কেটেও যায়। ডিপ্রেশন থাবা গেড়ে বসলে কিন্তু মন খারাপের মেঘটা ক্রমশ চেপে বসে। সেইসঙ্গে হারাতে বসে যুক্তিবোধ, রোগী ক্রমশ নিজেকে একটা গণ্ডির মধ্যে আটকে ফেলেন। কমতে আরম্ভ করে শারীরিক শ্রমের পরিমাণও।
ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফল খারাপ হতে আরম্ভ করে, অযথা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয় তারা, নেশার খপ্পরেও পড়ে কেউ কেউ। বেড়ে যায় রাগ, মাথাব্যথা, গা-হাত পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। ইনসমনিয়া, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও থাকে কারও কারও ক্ষেত্রে।
Advertisement
এই পরিস্থিতিতে নিকটজন ও পরিবারের সকলকে রোগীর পাশে দাঁড়াতেই হবে। প্রথমেই ভালো কোনো কাউন্সেলরের খোঁজ করুন, দরকারে বার বার কাউন্সেলর বদলাতে হতে পারে, তাতে নিরাশ হয়ে পড়ার কিছু নেই।
ডিপ্রেশনের মাত্রা বাড়লে ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধপত্রও খেতে হবে হয়তো। কখনোই রোগীকে একা ছাড়বেন না, তার পাশে কেউ না কেউ থাকুন, আশ্বাস দিন যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
রোগীকে উত্তেজিত করবেন না, তার কথা শুনুন মন দিয়ে। কাউন্সেলিংয়ে যেন কোনো ফাঁকফোকর থেকে না যায়, তা নিশ্চিত করুন। রুটিন মেনে এই সহায়তাটুকু জোগালেই দেখবেন, পরিস্থিতি বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে। তবে কোনো কিছুই তাড়াতাড়ি হবে না, ধৈর্য ধরতে হবে।
এইচএন/এমকেএইচ
Advertisement