মাঠে তাকে দেখলে একটু নরম-সরমই মনে হয়। খানিক রাশভারি। মনে হয় কথার চেয়ে কাজ করতেই বেশি পছন্দ তার। কিন্তু কেন উইলিয়ামসন যে কতটা সাহসী এবং রসিক, তার ব্যক্তিত্ব যে কতটা প্রবল? তা বোঝা যায় প্রেস কনফারেন্সের কথাবার্তায়।
Advertisement
একটি প্রশ্নর উত্তর দিতেও এতটুকু কুন্ঠা বোধ করেন না এ কিউই অধিনায়ক। ফাইনালের ২৪ ঘন্টা আগে কোন অধিনায়ক ফেবারিট আর আন্ডারডগ নিয়ে রসিকতা করতে পারেন, তাও লর্ডসের প্রেস কনফারেন্স হলে, যেখানে ১০০ ‘র ওপরে ভর্তি দেশি-বিদেশি সাংবাদিক আর আন্তর্জাতিক মিডিয়া হুমড়ি খেয়ে আছে। তাদের সামনেই ইংলিশ সাংবাদিকের প্রশ্নর জবাবে হাস্যরসের খোরাক সরবরাহ করতে জানেন -আজই দুপুরে লর্ডসের প্রেস কনফারেন্স হলে সে সত্য জানান দিলেন কেন উইলিয়ামসন।
বারবারই ইংলিশ সাংবাদিকরা খুনসুঁটি করে ইংল্যান্ডকে ফেবারিট আর নিউজিল্যান্ডকে 'আন্ডারডগ' বলে অভিহিত করছিলেন। তারা চাচ্ছিলেন কোনো না কোনোভাবে কেন উইলিয়ামসনের মুখ থেকে বের করতে যে কালকের ফাইনালে ‘ইংল্যান্ড ফেবারিট আর নিউজিল্যান্ডই আন্ডারডগ।’
সে প্রশ্নটাই আসলো ইংলিশ স্টাইলে। এক ইংরেজ সাংবাদিক ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘কেন, আপনার কি মনে হয় ১৪ জুলাইয়ের ফাইনালে ইংল্যান্ড ফেবারিট আর নিউজিল্যান্ড আন্ডারডগ? আর তাতে করে আপনাদের ফাইনালে ভাল খেলতে বাড়তি ঘাম ঝড়ানোর তাড়না বা তাগিদ থাকবে? কি বলেন?’
Advertisement
উত্তরে কেন উইলিয়মিসন এমন রসিকতা করলেন, পুরো হল হেসে উঠলো। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক বলে উঠলেন, ‘হ্যাঁ, অনেকেই অমনটা বলছেন। আমি এ কথা শুনেছি বহুবার। আমারও কিন্তু তাই মনে হয়। ইংল্যান্ডই ফাইনালে ফেবারিট। এবারের বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ইংলিশরা ফেবারিট। এবং মাঠে তারা ফেবারিটের পরিচয় দিয়েছে।’
তবে এর পরে কেইন যা বললেন, তাতে না হেসে উপায়ও নেই। ‘আন্ডারডগ’ শব্দ নিয়ে মেতে উঠলেন চরম রসিকতায়। হেসে হেসে বলে উঠলেন, ‘ইংলিশরা ফেবারিট। তবে আমরা যে প্রজাতির ডগই (কুকুর) হইনা কেন, ফাইনালে নিজেদের সেরাটা উপহার দিতে চাই। আমি বহুদিন ধরে দেখে এসেছি, যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে। সেটা যে জাতির কুকুরই হোক না কেন!’
এরপর আরও একটি প্রশ্ন উঠলো। বলার অপেক্ষা রাখেনা, এবারের প্রশ্ন কর্তাও এক ইংলিশ সাংবাদিক। তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে বললেন, ‘কেন, আমরা যারা নিউজিল্যান্ড গিয়েছি, তারা দেখেছি তোমরা কি দারুণ মানুষ। কিন্তু লর্ডসের কালকের ফাইনাল তো কারো উৎসব মাটি করে দিতে পারে? আগে তোমার অনুভূতিটা কি?’
উইলিয়ামসন ইংলিশ সাংবাদিকের খুনসুঁটি টের পেলেন। বুঝে নিলেন, ইংলিশরা তাদের উৎসব আনন্দ মাটি করে দেয়ার ছলেই অমনটা বলছেন। তাই চট জলদি চোখমুখে বিস্ময় এনে নিজে রসিকতার ছলে বলে উঠলেন, ‘তুমি কি আবারো সেই কুকুরের কথা বলছো? মানে এখানেও আন্ডারডগ ইস্যু।’
Advertisement
তারপর হাসিমুখে একটু চোয়াল শক্ত করে বলে দিলেন, ‘শোন, আমরা সত্যিই উৎসবে মেতে উঠতে চাই। আমাদের উৎসবের শেষ হচ্ছে ফল।’
তারপর যা বললেন, তার সারমর্ম হলো, ‘আমরা আসলে নিজেদের নিয়েই ভাবছি। আমরা জানি যে কোন খেলায় অনেক ভিন্ন রকম পরিবেশ-পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। অনেক ধরনের চাপও থাকে। আবার কোন সময় ছন্দপতনও ঘটে। আসলে নিজেদের সব রকম অবস্থার মধ্যেই ভাল করার জন্য তৈরি রাখতে হয়। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি।’
এআরবি/এমএমআর/পিআর