ফিচার

পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর হচ্ছে

পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে পাসপোর্ট ফিও। এক্ষেত্রে জরুরি ও সাধারণ উভয় পাসপোর্টের ফি এক হাজার টাকা করে বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়ার পর সরকারি কর্মকর্তারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারবেন সর্বোচ্চ দেড় বছর। বর্তমানে তারা তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত এ পাসপোর্ট ব্যবহার করেন।সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় এসব বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। অতিরিক্ত সচিব (বহিরাগমন ও নিরাপত্তা) মো. সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।জানতে চাইলে সদ্যবদলি হওয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বহিরাগমন ও নিরাপত্তা) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পাসপোর্টের মেয়াদ ও পাতার সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি পাসপোর্টের মেয়াদ ও ফি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। এটি মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলে তা শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি মিললে তা কার্যকর হবে।বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট পাঁচ বছরের জন্য ইস্যু করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সুবিধাসহ নানা কারণে বিভিন্ন মহল থেকে পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে ১৪ অক্টোবর বৈঠকে বসে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিস্তারিত আলোচনা ও পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়- ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিকের পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হবে। বিশেষ করে পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানো হলে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করা সহজ হবে। এছাড়া সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ফি তিন হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে চার হাজার টাকা এবং জরুরি পাসপোর্টের ফি ছয় হাজার টাকা থেকে সাত হাজার টাকা নির্ধারণ করে সুপারিশ করা হয়।বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়- সরকারি কর্মকতারা পিআরএলে যাওয়ার দিন থেকে শুরু করে এক বছর ছয় মাস (১৮ মাস) পর্যন্ত অফিসিয়াল পাসপোর্টপ্রাপ্ত হবেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ইচ্ছা করলে ওই সময়ের মধ্যে তার অফিসিয়াল পাসপোর্ট পরিবর্তন করে সাধারণ পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন। এ বিষয়ে বৈঠকে বলা হয়- বিভিন্ন সময়ে পিআরএল ভোগকারী কর্মকর্তারা তিন-চার বছর পর্যন্ত অফিসিয়াল পাসপোর্ট ব্যবহার করে থাকেন। ফলে ইমিগ্রেশনে সরকারি আদেশ নিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়।পাসপোর্টের পাতা সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠকে বলা হয়, বর্তমানে পাসপোর্টের ৪৮টি পাতা সংযোজিত রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে পাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ইতিমধ্যে ৫৫ মিলিয়ন পাসপোর্ট বুকলেট আমদানির চুক্তি হয়েছে। তাই এ মুহূর্তে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া বাংলাদেশ ফ্রিকুয়েন্ট ফ্লাইয়ার-এর সংখ্যা নগণ্য হওয়ায় বর্তমান পাসপোর্টই যথেষ্ট বলে মত দেন তিনি। এ সময় পাসপোর্ট অধিদফতরকে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া পাসপোর্ট প্রদানের স্থান নিয়ে প্রায়ই বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় বলে বৈঠকে জানানো হয়। বর্তমানে পাসপোর্ট প্রদানের স্থান হিসেবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের নাম উল্লেখ থাকে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মিশনগুলোয় পাসপোর্ট প্রদানের স্থান নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে পরবর্তীকালে বিস্তারিত আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হবে। সূত্র : যুগান্তর

Advertisement