জাতীয়

জীবন বাঁচাতে দুই গৃহকর্মীর অভিনব যুদ্ধ, উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দুই গৃহকর্মী বাসার আট তলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হয়ে রশি বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করলে একজন পড়ে গিয়ে আহত হয়। আরেকজনকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার করেন।

Advertisement

শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে ধানমন্ডির ১৪/এ নম্বর রোডের ২৪ নম্বর বাড়ির ৭-এ ফ্ল্যাটে (৮ তলা) এ ঘটনা ঘটে। গৃহকর্মী হলো- শরীফ (১২) এবং স্বপন (১১)।

রশি বেয়ে নিচে নামার সময় শরীফ হাত ফসকে নিচে পড়ে গেলে তার পা ভেঙে যায়। খবর পেয়ে স্বপনকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করেছে। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তারা সার্ভেন্ট রুমের টয়লেটের ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হয়। পরে রশি বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে।

Advertisement

ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ হিল কাফী জাগো নিউজকে বলেন, দু’জনের মধ্যে একজন দেড় বছর ধরে কাজ করে। আরেকজন ৮-১০ দিন আগে এসেছে। তাদের নির্যাতন করা হতো। আমরা তাদের শরীরে মারধর ও নির্যাতনের আলামতও পেয়েছি।

ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি নির্যাতনের কারণে তারা একবার মূল দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তবে সিঁড়িতে তাদের ধরে মারধর করে গৃহকর্তা। তাই এবার তারা পেছন দিয়ে পালানোর পরিকল্পনা করে। তারা টয়লেটের অ্যাডজাস্ট ফ্যান খুলে কাপড় শুকানোর রশি দিয়ে নামার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে একজন পাঁচতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় পড়ে যায়। আরেকজন রশিতে ঝুলতে থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গৃহকর্তা, তার স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়েকে আটক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের গ্রেফতার করা হবে। এ ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে।

ধানমন্ডি থানার ডিউটি অফিসার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা করা হয়নি।’

Advertisement

ফায়ার সার্ভিস সদর দফতর কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকাল ১০টায় এ ঘটনার সংবাদ আমাদের কাছে আসে। ১০টা ১৮মিনিটে ফায়ার সার্ভিস উপস্থিত হয়ে তাদের উদ্ধার করে।’

শরীফকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার একটি পা ভেঙে গেছে।

এআর/আরএস/জেএইচ/এমকেএইচ