শরতেও জমজমাট বরিশাল অঞ্চলের সর্ববৃহৎ ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলার সীমান্তবর্তী আটঘরের নৌকার হাট। মূলত বর্ষা ঋতুকে কেন্দ্র করে খাল-বিল আর নদীবেষ্টিত বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বড় নৌকার হাট জমে ওঠে। তবে পুরোদমে বিক্রি চলে হেমন্ত পর্যন্ত। বর্ষা মৌসুমের পেয়ারা, আমড়া কিংবা মাছের ঘের সবখানেই নৌকা প্রধান বাহন। শুধু কৃষি কাজই নয়, এ অঞ্চলে অনেক এলাকা আছে যেখানে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি যেতেও নৌকা ছাড়া ভাবাই যায় না। এখানের প্রতি হাটে দেড়-দুই লাখ টাকার নৌকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীরা। সাধারণ বিক্রেতাদের কাছ থেকে হাজারে ১০০ টাকা করে ইজারা নেন ইজারাদার। হাটে আসা সন্তোষ মিস্ত্রি নামের এক নৌকা বিক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক একটি নৌকা। বছরের চার মাস এখানে প্রতি শুক্রবার নৌকার হাট বসছে। বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলার হাজার হাজার মানুষ শত বছর ধরে এ পেশায় জড়িত বলে জানান ওই নৌকা বিক্রেতা। ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম গ্রামের মিস্ত্রি আব্দুল খালেক জাগো নিউজকে বলেন, গ্রামের সাধারণ গাছ যেমন রেইনট্রি, মেহগনি এমনকি সাড়ি চাম্বল গাছ থেকেও নৌকা তৈরি করা হয়। এক একটি নৌকা তৈরি করতে কমপক্ষে ৭ দিন লেগে যায়। হাটের ইজারার টাকা দিয়ে এক একটি নৌকা বিক্রি করে ৩০০ টাকা লাভ হয়। ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া গ্রামের মো. আব্দুল খালেক নৌকা কিনতে আসেন এই হাটে। তিনি জানান, প্রতি বছরই তিনি এ মৌসুমে ডিঙি নৌকা কিনে থাকেন। দেড়-দুই হাজার টাকায় দুই একটি করে সিজোনাল নৌকা কিনে তা দিয়েই চলাচল করেন। এ ব্যাপারে কথা হয় ঝালকাঠি বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক অসীম কুমার ঘোষের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিসিক এ শিল্পটিকে সহায়তা করে আসছে। তবে নৌকা তৈরির কারিগররা চরম দরিদ্র পরিবারের। ফলে পুঁজি না থাকায় এ শিল্পকে প্রসারিত করতে পারছেন না তারা। তিনি আরো জানান, এ শিল্পে জড়িতদের সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ কিংবা এককালীন অনুদান দিলে নৌকা তৈরির এ পেশাকে সারা বছরের স্থায়ী পেশায় রূপান্তর করা করা যায় বলে পরামর্শ দেন বিসিকের ওই কর্মকর্তা ।এসএস/এমএস
Advertisement