দেশজুড়ে

শেরপুরে মৃগী নদীতে পানি বেড়ে ৪০ গ্রাম প্লাবিত

বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নকলা উপজেলার মৃগী নদীতে পানির তীব্র স্রোতে ভাঙন শুরু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরের দিকে মৃগী নদীর ভাঙনে নকলার বাছুর আলগা দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের বাড়ির বসতভিটাসহ মাহবুব হাজী ও জামাল চৌকিদারের ১০ শতক আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে।

Advertisement

নদী ভাঙনের কারণে ওই এলাকার আরও দুইটি বসতভিটার বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল কিছুটা কমে আসায় ঝিনাইগাতী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে, শ্রীবরদী উপজেলার রূপারপাড়া গ্রামে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে মাঠ থেকে গরু আনার সময় বজ্রপাতে কাশেম মিয়া (৪০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহত কাশেম ওই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খড়িয়া কাজীর চর ইউনিয়নের স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জাবের মিয়া বলেন, বিকেলে আকাশ কালো করে বৃষ্টি শুরু হলে কাশেম মিয়া বাড়ি থেকে মাঠে গরু আনতে যায়। এসময় পর পর কয়েকটি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে কাশেম মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় লংগড়পাড়া বাজারের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যেই তার মৃত্যু ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতের কারণে নকলায় মৃগী নদীতে পানিবৃদ্ধির কারণে শুরু হয়েছে ভাঙন। ভারী বর্ষণের কারণে চিকারবাড়ী ঘাট সংলগ্ন ২০ ফুট পাকা রাস্তার নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ওই সড়কে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বিকেলে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জানান, ভারী বর্ষণে নদীতে পানির তীব্র স্রোতের কারণে নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙনের হাত থেকে সতর্ক থাকার জন্য এলাকাবাসীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

Advertisement

এদিকে, ঝিনাইগাতীর উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি ভাটির দিকে নামতে থাকায় ঝিনাইগাতী সদর ও ধানশাইল, ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে মালিঝিকান্দা, হাতিবান্দা ও গৌরিপুর ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বর্তমানে ওই ৫টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে।

বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ। তবে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে ত্রানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বিকেলে ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম এ ওয়ারেজ নাইম ঝিনাইগাতীর বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

হাকিম বাবুল/এমএএস/পিআর

Advertisement