জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে জুলাইয়েই ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় দিলে চলতি জুলাই মাসেই ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির নেতা ও সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ে মন্ত্রী এ কথা জানান।

ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে বলে কয়েক দফা তারিখ ঘোষণা করা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সর্বশেষ বলা হয়েছিল জুলাইয়ে ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে। কবে নাগাদ ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ই-পাসপোর্টের আগে এমআরপি করেছি। আমরা ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের কাছে এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) হ্যান্ডওভার করতে পেরেছি। সারা পৃথিবীতে নতুন প্রযুক্তিতে ই-পাসপোর্ট চলে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট ও ই-গেট করতে আমরা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। জার্মানির একটি খ্যাতনামা কোম্পানি পুরো প্যাকেজ হিসেবে কাজ করছে। তারা সব ধরনের কাজ গুছিয়ে এনেছেন। আমার মনে হয়, প্রতিদিনই তো খবর নিচ্ছি- জুলাইয়ের যে কোন সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটা উদ্বোধন করতে পারবেন। যদি না হয়, এটা প্রধানমন্ত্রীর সময়ের ওপর নির্ভর করছে। কারণ এটা একটা ঐতিহাসিক জিনিস আমরা করতে যাচ্ছি। সেই জায়গাটিতে যখন যাব প্রধানমন্ত্রী সেটা উদ্বোধন করবেন। এটা প্রায় রেডি হয়ে আছে, যেকোনো সময় আমরা করতে পারবো,’ বলেন আসাদুজ্জামান খান।

Advertisement

অত্যাধুনিক এই ই-পাসপোর্ট একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর (মোবাইলের মেমোরি কার্ডের মতো) চিপ থাকবে। এই মাইক্রোপ্রসেসর চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে, যাতে পাসপোর্টধারীর পরিচয়ের সত্যতা থাকে। ই-পাসপোর্টে মোট ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডাটাবেজে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। ই-পাসপোর্ট চালু হলে জালিয়াতি ও পরিচয় গোপন করার কাজ কঠিন হবে বলে দাবি করছে অধিদফতর। পৃথিবীর ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করেন।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান জার্মানির কোম্পানি ভেরিডোসের সঙ্গে ই-পাসপোর্টের চুক্তি করেন। এরপর ডিসেম্বর মাসে পাসপোর্ট দেয়ার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনে অধিদফতর। নির্বাচনের আগ দিয়ে প্রথম ধাপে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে (সিআইপি) ই-পাসপোর্ট দিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করার কথা ছিল। সর্বসাধারণকে জানুয়ারিতে পাসপোর্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি।

খুন ধর্ষণ বেড়ে গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কী ভূমিকা নেবে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে হত্যাকাণ্ড দেখেছি, শিশুকে ধর্ষণ দেখেছি, এগুলো আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়। আমাদের দেশে যে সামাজিক শাসনটা ছিল সেটা আস্তে আস্তে ক্ষয়ে যাচ্ছে। যে সামাজিক মূল্যবোধ ছিল সেটার প্রতি আমাদের নজর নেই। আমরা কাজ করছি, কাজ আরও করে যাব। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। যারা এ কাজ করছে আমরা তাদের দ্রুততার সঙ্গে শনাক্ত করছি, বিচারের মুখোমুখী করে দিচ্ছি। যেটা আমাদের প্রধান কাজ।’

তিনি বলেন, ‘ফেনীর ঘটনার চার্জশিট আমরা দিয়ে দিয়েছি, বিচার শুরু হয়ে গেছে। বরগুনায় রিফাত হত্যার বিচার যাতে দ্রুত হয় সেজন্য আমরা পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট খুব তাড়াতাড়ি দেয়ার চেষ্টা করব।’

Advertisement

চার্জশিটের ফাঁক-ফোকরের কারণে অনেক সময় মূল অপরাধীর শাস্তি হয় না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। কীভাবে নিখুঁত চার্জশিট তৈরি করতে হবে, সেটার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’

অনেক সময় দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ ইচ্ছে করে দুর্বল চার্জশিট দেয়- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ভুল সবাই করতে পারে, অনেকে ইচ্ছা করেও ভুল করে। যারা ভুলভ্রান্তি করেন তাদের শাস্তি দেয়া হয়। আমাদের সামনে যেগুলো আসে, হয় বিভাগীয় মামলা হয়, না হয় আইনের হাতে সোপর্দ করে দিচ্ছি।’

আরএমএম/এনএফ/এনডিএস/জেআইএম