আইন-আদালত

স্ত্রীর ডেঙ্গু, মেয়রের কাছে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চান স্বামী

স্ত্রী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) কাছে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংস্থার মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ব্যক্তি স্বার্থে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম এই নোটিশ পাঠান।

Advertisement

নোটিশে বলা হয়, গত ২৯ জুন আমার স্ত্রী (নোটিশদাতার স্ত্রী) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, তার রক্তে প্লাটিলেট ১১ হাজারে নেমে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পাঁচ দিন হাসপাতালে থেকে আংশিক সুস্থতা লাভ করেন। গত বছরের অক্টোবরে আইনজীবী তানজীম নিজেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।

এ নোটিশে বলা হয়, নোটিশ গ্রহীতাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে মশা নিধন করা ও সিটির বাসিন্দাদের জন্য শহরকে বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরিত করা। কিন্তু, এ এলাকায় (খিলগাঁও থানার ১ নম্বর ওয়ার্ড) প্রায় তিন বছর বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত মশা নিধনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। এমনকি, সচেতনতামূলক প্রচারণাও করা হয়নি। ভয়ঙ্কর এডিস মশা নিধনে আপনাদের ব্যর্থতা স্পষ্ট প্রতীয়মান ও এর জন্য আপনারা দায়ী।

‘আমার স্ত্রীর চিকিৎসা ও তার ডেঙ্গুর কারণে সন্তানসহ পরিবার অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন। এ ক্ষতির দায়ভার আপনাদের ওপর বর্তায়। কারণ, নাগরিকদের মশার উৎপাত থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব আপনাদেরই। আমার স্ত্রীর চিকিৎসা বাবদ ৫০ হাজার টাকা, আমার আইনজীবী হিসেবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার জন্য আড়াই লাখ টাকা, দুই সন্তানের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির পরিমাণ ও পরিবারের নিদারুণ মানসিক ক্ষতির পরিমাণ অপূরণীয় হলেও, ৪৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো। অর্থাৎ, আপনাদের মশা নিধনে ব্যর্থতার দরুন আমার মোট ৫০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষয়ক্ষতির জন্য আপনারা আইনত দায়ী।’

Advertisement

নোটিশে আরও বলা হয়, নোটিশ পাওয়ায় সাত কার্যদিবসের মধ্যে আপনাদের ব্যর্থতার দরুণ আমার স্ত্রীর ডেঙ্গু আক্রান্তের কারণে আমাকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বাধিত করবেন। একই সঙ্গে, এডিস মশা নিধনে কী কী পদক্ষেপ ও কত টাকা ব্যয় করেছেন, তা তথ্য অধিকার আইনমতে লিখিতভাবে অবহিত করতে অনুরোধ করা হলো। সর্বোপরি, এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ও খিলগাঁওয়ের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মশা নিধনে তিন দিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায়, আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ আদায়ে ও প্রতিকার চেয়ে রিট করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

চলতি বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে ব্যাপক আকারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার খবর রয়েছে । ১ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ছয় দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৭৪৬ জন। রাজধানীর বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসজনিত ডেঙ্গু জ্বর।

এরজন্য নগরবাসী সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন প্রক্রিয়াকে দায়ী করলেও সিটি কর্পোরেশনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে- ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া মোকাবিলায় এবং মশক নিধনে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এফএইচ/এনএফ/জেআইএম/এমকেএইচ

Advertisement