২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে তিন শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে নছিরন বেগম (৬৭) নামে এক বৃদ্ধা এ রোগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শহর এবং শহরতলীর ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। নির্ধারিত ওয়ার্ডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতাল ভবনে প্রবেশের প্রধান গেট বন্ধ করে করিডোরসহ বিভিন্নস্থানে রোগীদের গাদাগাদি করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। জেলার অন্যান্য হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওইসব হাসপাতালে শতাধিক রোগী ভর্তি এবং চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে গাইবান্ধা সদর উপজেলার পরিস্থিতিই ভয়াবহ। বন্যার পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এদিকে শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৫ জনে। এছাড়া হাসপাতালে জায়গা না হওয়ায় আরো শতাধিক রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে স্যালাইন লাগিয়ে বাড়ি চলে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য হাসপাতালের সামনে ব্র্যাকের সহযোগিতায় অস্থায়ীভাবে ত্রিপল টানিয়ে ২০ বেডের একটি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে হাসপাতাল চত্বরে বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ ও অস্থায়ীভাবে কয়েকটি ল্যাট্রিন স্থাপন করেছে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন শহরে মাইকিং করে ফুটানো বা বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতালে ঢুকতে না পেরে হাসপাতাল চত্বরেই পলিথিন বিছিয়ে শুয়ে পড়েছে এমন দৃশ্যও দেখা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন। সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরীসহ চিকিৎসকদের সেখানে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে দেখা গেছে। জেলা রোভার স্কাউটস এর সদস্যরা চিকিৎসা সেবায় সহায়তা করছে। দুপুরের পর জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সামাদ হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের খোঁজখবর নেন। সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, বন্যা পরবর্তী অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে রোগীদের সার্বক্ষণিক সেবা দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে। তিনি জানান, ঢাকার মহাখালী আইইডিসিআর এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আল মামুন মাহবুব আলমের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি অনুসন্ধানী টিম শুক্রবার বিকেলে গাইবান্ধায় এসে পৌঁছেছেন। তারা এ পরিস্থিতির কারণ অনুসন্ধান করবেন। অমিত দাশ/ এমএএস/পিআর
Advertisement