দেশজুড়ে

শিকলে বেঁধে শিশু নির্যাতন : আসামিদের হুমকিতে পরিবার

বরগুনায় জোবায়ের নামে ১১ বছরের এক শিশুকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় শিশুটির পরিবারকে তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিশু জোবায়েরের পরিবারের। শুক্রবার বিকেলে শিশুটির মা কাজল বেগম জাগো নিউজকে বলেন, জোবায়েরকে নির্যাতনের ঘটনায় গত বুধবার তিনি বাদী হয়ে এমাদুল হক, তার ছোট ভাই ফরিদ হাসান ও এমাদুলের বাবা খলিল আকনকে আসামি করে বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা করার পর থেকেই বিভিন্ন সময় ফোন করে মামলা তুলে নেয়ার জন্য এমাদুল ও তার পরিবারের লোকজন নানভাবে হুমকি তাদের দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, বিষটিকে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার জন্য এমাদুলের পরিবার তাদের উপর বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করছে।জোবায়েরের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তার মা বলেন, জোবায়েরের ডান হাতের কনুই ফুলে আছে। দুই ঠোট ও সামনের দাঁতের ওপরের অংশ, দুই হাত ও মাথা এবং বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করছে। হাসপাতালে জোবায়েরকে নিয়ে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ হোসেন পিপিএম জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার পর আসামিরা গা ঢাকা দেওয়ায় এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকেলে বরগুনার কদমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী জোবায়ের স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হলে স্থানীয় আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামে একটি মুদির দোকানে আশ্রয় নেয়। এসময় দোকানের মধ্যে কেউ আছে কি না তা দেখার জন্য একটি ফাঁকা দিয়ে দোকানের মধ্যে উঁকি দেয় জোবায়ের।এই খবর শুনে দোকানের মালিক স্থানীয় খলিল আকনের ছেলে এমাদুল জোবায়েরকে তাদের ঘর থেকে টেনে হিচরে বের করে নির্যাতন শুরু করে। কিল ঘুষি এবং উপর্যুপরি লাথি মেরে মুখের দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয় তার। প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে তাল গাছের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে নির্মম নির্যাতন চালায় এমাদুল।নির্যাতনের এক পর্যায়ে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে মাটিতে চিৎ করে শুইয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে বলা হয় জোবায়েরকে। চোখ বন্ধ করলেই চলে নির্যাতন। পরে স্থানীয় অধিবাসীদের সহযোগিতায় দুই ঘণ্টা পরে জোবায়েরকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমএএস/পিআর

Advertisement