নিউজিল্যান্ডের নামের পাশে সেঁটে গিয়েছিল 'সেমিফাইনালের দল' তকমা। গত বিশ্বকাপের (২০১৫) আগ পর্যন্ত এটিই ছিল কিউইদের বড় পরিচয়। এখন থেকে বোধ হয় নতুন করে ইতিহাস লিখতে হবে। যারা বলতেন, নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালের দল, তাদের জবাব দিয়েই টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্ল্যাক ক্যাপসরা।
Advertisement
২০১৫ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ৫টি সেমিফাইনাল খেলে প্রতিবারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বে গতবারই প্রথম ফাইনালে উঠে কিউইরা। যদিও শেষটা ভালো হয়নি। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে রানারআপ হতে হয় ম্যাককালামের দলকে।
সেবার সেমিফাইনালেও বৃষ্টিবাধায় পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটি নেমে এসেছিল ৪৩ ওভারে। যে ম্যাচে ৪৩ ওভারে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ তাড়া করে ফেলে কিউইরা, ডাকওয়ার্থ লুইসে জিতে যায় ৪ উইকেট আর ১ বল হাতে রেখে।
এবার তো বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছিল আরও বড় করে। ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডেতে। আর ভারতকে মাত্র ২৪০ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিতে পারে নিউজিল্যান্ড, পুরো ৫০ ওভারে। এমন ম্যাচ কি জেতা সম্ভব! এক ইনিংস পার হওয়ার পর ভারতের পক্ষেই বাজি ছিল সবার।
Advertisement
কিন্তু বল হাতে নিয়ে রীতিমত আগুন ঝড়ালেন ট্রেন্ট বোল্ট-ম্যাট হেনরিরা। ৫ রানে ৩ আর ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর আসলে ম্যাচ থেকে ছিটকেই পড়ে ভারত। সেখান থেকে ধুঁকতে ধুঁকতে যখন ৯২ রানের মধ্যে ৬ উইকেট চলে গেল, তখন নিউজিল্যান্ডের জয়টা কেবলই সময়ের ব্যাপার।
কে জানতো, শেষটার জন্য রোমাঞ্চ জমিয়ে রেখেছেন ধোনি-জাদেজা? অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেললেন রবীন্দ্র জাদেজা, ৫৯ বলে ৭৭ রানের। তিনি যখন আউট হন, তখনও জয়ের আশা রয়ে গেছে ভারতের। উইকেটে যে ছিলেন 'ঠান্ডা মাথার খুনি' মহেন্দ্র সিং ধোনি। শেষ ১৩ বলে ৩২ রান দরকার ছিল ম্যান ইন ব্লুদের।
ধোনি ছক্কা হাঁকালে শেষ ১১ বলে দরকার পড়ে ২৫ রানের। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের শেষটাও হয় রোমাঞ্চে। এক বল পরই ডাবলস নিতে গিয়ে মার্টিন গাপটিলের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে যান ৭২ বলে ৫০ রানে থাকা ধোনি। শেষ দুই উইকেট তুলে নিতে আর কষ্ট হয়নি নিউজিল্যান্ডের। তীরে এসে তরী ডোবে ভারতের।
অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ জিতে এখন ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। টানা দ্বিতীয়বারের মতো। গতবার হয়নি। দলকে ফাইনালে তোলার ইতিহাস গড়ে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম শিরোপা জেতাতে পারেননি। উত্তরসূরী কেন উইলিয়ামসনের হাত ধরে কি সেই আক্ষেপ ঘুচবে কিউইদের?
Advertisement
এমএমআর/পিআর