আইন-আদালত

ডিআইজি মিজানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা আদালত।

Advertisement

বুধবার ঘুষ লেনদেনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে জানিয়ে ডিআইজি মিজানুরকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ১৫ জুলাই তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত আদেশের অনুলিপি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে ২ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস ডিআইজি মিজানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Advertisement

এদিন বেলা পৌনে ১১টায় শাহবাগ থানা থেকে ডিআইজি মিজানকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জামিনের আবেদন করেন।

অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল তার জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস ডিআইজি মিজানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

১ জুলাই হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য গেলে ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। এ সময় মিজানকে তাৎক্ষণিক হাইকোর্ট পুলিশের হাতে তুলে দেন। গ্রেফতারের পর তাকে শাহবাগ থানায় নেয়া হয়।

এ সময় আদালত বলেন, মিজানুর রহমান প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়ে পুলিশ বিভাগের ইমেজ ধ্বংস করেছেন। যেটা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কাম্য নয়।

Advertisement

এরপর আদালত তাকে গ্রেফতার ও মামলার অপর আসামি ডিআইজি মিজানের ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসানকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। পরে ২৫ জুন মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

অন্যদিকে মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ প্রশাসন। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। যদিও নারী নির্যাতন, ঘুষ প্রদান, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে দুই বছর ধরে মিজানুরের নাম আলোচনায় এলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়।

জেএ/জেএইচ/জেআইএম