পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্যের দীর্ঘদিনের প্রথা যেন ভাঙতে শুরু করেছে। দেশের সব জেলায় এবার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ করার কড়া নির্দেশনা ছিল পুলিশ সদর দফতরের। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনোয়ার হোসেন খান কথা দিয়েছিলেন মাত্র ১০৩ টাকায় কনস্টেবল পদে চাকরি মিলবে। প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা আমলে নেয়া হবে না।
Advertisement
সেই কথামতো কাজও হয়েছে। কোনো প্রকার ঘুষ-তদবির ছাড়াই ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট্ আর ৩ টাকার ফরম কিনে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৯টি উপজেলার ৯৮ জন নারী-পুরুষ। শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার বিকেলে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে ফলাফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান। জেলার ৯টি উপজেলায় সব মিলিয়ে ৩৯ জন পুরুষ ও ৫৯ জন নারী চাকরি পেয়েছেন। ফলাফল ঘোষণা শেষে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার। এতে শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, কোনো তালিকা-তদবির আমলে না নিয়ে শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হয়েছে। চাকরি প্রার্থীরা যেন কারো সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করে সেজন্য এলাকায় মাইকিংসহ বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে তাদেরকে সচেতন করা হয়েছে।
Advertisement
পুলিশ সুপার আরও বলেন, চাকরির জন্য কাউকেই সরকার নির্ধারিত ফির বেশি অর্থ দিতে হয়নি। চাকরির জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীতদের মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদেরকে পুলিশে চাকরি দিতে পেরে আমরাও গর্ববোধ করছি।
ঘুষ ছাড়া পুলিশে চকরি পেয়ে রীতি মতো অবাক হয়েছেন চাকরির জন্য মনোনীত প্রার্থী ও তাদের স্বজনরা। ফলাফল ঘোষণা মঞ্চে কয়েকজন মনোনীত প্রার্থী তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। দেশমাতৃকার সেবায় নিজেদের সবটুকু উজার করে দেয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ছুফি উল্লাহ ও কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইও-১ মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২ জুলাই নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান জানিয়েছিলেন তাঁর কাছে কোনো প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির তালিকা আসেনি। তালিকা এলেও সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। আর নিজের বিভাগের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও যদি কারো জন্য ফোন করেন তাহলে তার জন্যও কিছু করার থাকবে না।
আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/এমএস
Advertisement