মাত্র ৩০ হাজার টাকার জন্য জীবন এলোমেলো হয়ে গেছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নাঈম হাসানের। বন্ধ হয়ে গেছে তার স্কুল যাওয়াও।
Advertisement
জন্মের পর থেকেই নাঈমের মূত্রনালীর পথ বন্ধ। এতে স্বাভাবিকভাবে সে প্রস্রাব করতে পারে না। জন্মের পরপরই তাকে চিকিৎসক দেখানো হলে ১০ বছর বয়সের পর তার অপারেশন করানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এজন্য ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়। নাঈমের বয়স এখন ১২ বছর। বয়স দুই বছর অতিক্রম হলেও রিকশাচালক বাবা আজও সেই টাকা জোগাড় করতে পারেননি।
আরও পড়ুন > জিবিএস রোগে আক্রান্ত লাখে একজন ঠাকুরগাঁওয়ের হারুন
নাঈম সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মঙ্গলকাটা এলাকার বাঘমারা গ্রামের বাসিন্দা ময়না মিয়ার ছেলে। তবে তারা এখন সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কালিপুর এলাকায় অন্যের বাসায় বসবাস করছে। কাজের সন্ধানে সম্প্রতি শহরে এসেছে তারা।
Advertisement
ময়না মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই নাঈমের প্রস্রাবের রাস্তা বন্ধ। চিকিৎসক বলেছিলেন অপারেশন করাতে। এজন্য নাকি সব মিলে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে। কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য নেই।
তিনি বলেন, নিজের কোনো ঘর নেই। মানুষের বাড়িতে থাকি। কাজের তাগিদে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে এসেছি। রিকশাটাও ভাড়া। অনেক কষ্টে সংসার চালাই। ছেলেটার অপারেশন করাতে পারি না। কোথায় পাব এত টাকা, বলেন তিনি।
নাঈমের মা রোফিয়া বেগম বলেন, নাঈম যত বড় হচ্ছে তার সমস্যাও বাড়ছে। এমন অবস্থায় কয়েক দিন কষ্ট করে স্কুলে গেলেও এখন আর যেতে পারে না। সে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারে না। রাতে বিছানায়ই প্রস্রাব করে অনেক সময়। আমরা গরিব মানুষ। থাকি অন্যের বাসায়। কেউ যদি পাশে দাঁড়াতো তাহলে ছেলেটার তাড়াতাড়ি অপারেশন করাতে পারতাম।
একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, নাঈম আমার নাতি। সে খুব ভালো ছেলে। কিন্তু টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছি না আমরা।
Advertisement
একই গ্রামের বাসিন্দা শুকুরা খাতুন বলেন, ছেলেটার চিন্তায় তার মা-বাবার ঘুম নেই। একটা ভিটা ছিল সেটাও মেঘ বৃষ্টিতে শেষ। আমি একটা ঘরে থাকার জায়গা দিয়েছি। কিন্তু ছেলেটার অসুস্থতার জন্য কেউ কিছু করতে পারছি না।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র হোসেন আহমেদ রাসেল বলেন, আমাদের পৌরসভা থেকে হতদরিদ্র মানুষের ছেলে-মেয়েদের জন্য দুটি ফান্ড আছে। একটি শিক্ষাক্ষেত্রে, অন্যটি চিকিৎসাক্ষেত্রে। এজন্য ময়না মিয়াকে পৌর মেয়র বরাবর আবেদন করতে হবে।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা বলেন, আর্থিকভাবে সহযোগিতার জন্য আমাদের বরাদ্দ নেই। তাই তার অন্য কোনো সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা তা করতে পারবো। হাসপাতালে থাকা, চিকিৎসককে বলা অথবা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা ইত্যাদি আমরা সহযোগিতা করতে পারবো।
নাঈমের চিকিৎসায় কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে কথা বলতে পারেন তার বাবা ময়না মিয়ার ০১৮৮৭-৪৯৩০২৪ (বিকাশ) নম্বরে।
মোসাইদ রাহাত/এমএএস/জেআইএম