সকাল সাড়ে ১১টার পর কেউ আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেলে বিস্ময়ে চোখ ছানাবড়া হবে। অবাক হয়ে তারা লক্ষ্য করবেন শহীদ মিনারে চৌহদ্দীতে এতটুকু ধূলাবালি, এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা আবর্জনা ও জমাটবদ্ধ নোংরা পানির ছিটেফোঁটাও নেই। মহান একুশে ফেব্রুয়ারির দিন যেমন সব কিছু ঝঁকঝঁকে তকতকে থাকে ঠিক তেমনি সর্বত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। পাঠকরা নিশ্চয়ই ভাবছেন যে প্রতিবেদক দুদিন আগেই শহীদ মিনারের অব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে ‘২১শে ফেব্রুয়ারি এলেই জাগ্রত হয় চেতনা’ শিরোনামে প্রতিবেদন লিখলেন তিনিই আবার এসব কী গল্প ফাঁদছেন। শুনতে গল্প মনে হলেও এমন দৃশ্যই সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদকের চোখে পড়ে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জনা চল্লিশেক শিক্ষার্থী ‘সোশ্যাল সুইপার বিডি’ নামে একটি পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চৌহদ্দীতে ঝাড়ু দেয়া, জমে থাকা ময়লা পানি ধোয়ামোছা করা ও পলিথিনসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করেছে। জাত সুইপার না হলেও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলের মুখাপেক্ষি না হয়েও যে পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যায় তাই করে দেখিয়েছে সোশ্যাল সুইপাররা। মামুন রেজা নামে এক যুবক (চাটার্ড অ্যাকাউনন্টে অধ্যয়নরত) ঢাকা শহরের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের এ সংগঠনটি আজ থেকেই যাত্রা শুরু করেছে বলে জাগো নিউজকে জানান। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযানের প্রথম স্থান হিসেবে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতিবিজাড়িত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকেই বেছে নিয়েছেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্টের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আহাদুল ইসলাম শিমুল ও তার বন্ধু ঢাকা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইয়াজ হোসেন ও আরিফুজ্জামান জানান, প্রায়ই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে, বিশ্বের দ্বিতীয় নোংরা শহর ইত্যাদি শিরোনামে প্রতিবেদনটি তাদের ব্যথিত করে। তাই তারা ঢাকা শহরের পরিবেশকে সুন্দর করতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন। গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে শহরটিকে অবশ্যই আবার বসবাসযোগ্য করা সম্ভব হবে বলেও জানান তারা। ইস্টার্ন ব্যাংকের সেলস এক্সিকিউটিভ মো. রাসেল মিয়া জানান হাতে হাত রাখি পরিবেশ রক্ষা করি এই শ্লোগানকে সামনে রেখে তারা মানুষকে সচেতন করতে কিছু বার্তা পৌঁছে দিবেন। সংগঠনের লিফলেটে বলা হয়েছে আপনার ফেলে দেয়া পলিথিন ও চিপসের প্যাকেট ও অব্যবহৃত পানি পরিবেশ দূষণ ও জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী নয় কি? প্রতিদিন কমপক্ষে একটি পলিথিনকে না বলুন। আপনার ছায়া দূরত্ব পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আপনার নয় কি? আগামী প্রজম্মের জন্য সুস্থ পরিবশই একান্ত কাম্য। এমইউ/এসকেডি/এআরএস/এমএস
Advertisement