নীলফামারীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মা ও মেয়েকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের ঘরে আগুন দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
শুক্রবার সকালে জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের বড় এলকমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিপক্ষের নির্যাতনে আহতরা হলেন ওই গ্রামের বাসিন্দা নৃপেন্দ্র নাথ রায়ের স্ত্রী রঞ্জনা রাণী রায় (৪৮) ও তাদের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে নীপা রাণী রায়। তারা দুজনেই নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন (২৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
গ্রেফতার আনোয়ার পার্শ্ববর্তী চড়াইখোলা ইউনিয়নের দালালের বাজার গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বাড়িভিটার সঙ্গে ৩০ শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছিলেন নৃপেন্দ্র নাথ ও তার তিন ভাই। সম্প্রতি ওই জমি ক্রয়সূত্রে দাবি করেন পার্শ্ববর্তী চড়াইখোলা ইউনিয়নের দালালের বাজার গ্রামের মজিবর রহমান। এর জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা চলছে।
গত ৩ জুলাই মজিবরের দায়ের করা মামলায় জামিন নিতে গেলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে নৃপেনকে কারাগারে পাঠায়।
এ অবস্থায় শুক্রবার সকালে মজিবর রহমান লোকজন নিয়ে ওই জমি দখল নিতে যান। নৃপেনের পরিবারের সদস্যরা এতে বাধা দেয়। এসময় মজিবরের লোকজন নৃপেনের স্ত্রী রঞ্জনা ও তার মেয়ে নীপাকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরসহ শ্লীলতাহানি করে এক পর্যায়ে তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
Advertisement
খবর পেয়ে পুলিশ এসে নৃপেনের স্ত্রী ও মেয়েকে উদ্ধার করে নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উত্তরা ইপিজেডের ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নেভায়।
ঘটনায় দিন সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় নৃপেনের বড়ভাই সুনীল রায় (৫৫) সদর থানায় মজিবরসহ তার দলবলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মজিবরের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে।
সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নৃপেনের স্ত্রী রঞ্জনা রাণী রায় বলেন, মজিবরের লোকজন আমাকে ও আমার মেয়েকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে যৌন হয়রানিসহ বেধরক মারধর করে। এসময় তারা আমাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এলাকাবাসীর খবরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে আগুন নেভায়। পরে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
নীলফামারী সদর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জাহেদুল ইসলাম/এমবিআর/এমকেএইচ