লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় দুইদিন ধরে সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ির সামনে অনশন করছেন রেবিনা বেগম (২৪) নামে এক নারী। শুক্রবার রাতেও সন্তানকে রাস্তায় শুইয়ে রেখে সারারাত বসে কাটিয়েছেন তিনি।
Advertisement
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামীর বাড়িতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। এরপর থেকে সন্তানকে নিয়ে অনশন শুরু করেন রেবিনা বেগম।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত তরিফ উদ্দিনের ছেলে এমদাদুল ইসলামের সঙ্গে একই উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবী গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে রেবিনা বেগমের ২০০৬ সালে ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এর মাঝেই দুই সন্তানের মা হন রেবিনা বেগম।
কিন্তু এমদাদুল ইসলাম ব্যবসার কথা বলে স্ত্রীকে আবারও যৌতুকে টাকার জন্য চাপ দেন। রেবিনা বেগমের বাবা গরিব হওয়ায় টাকা দিতে না পারায় নির্যাতন শুরু করেন এমদাদুল। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ হলেও কাজে আসেনি। রেবিনা স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে বাবা বাড়ি এসে আদালতে মামলা করেন।
Advertisement
এর মধ্যে আদালতে মামলা চলাকলীন এমদাদুল ইসলাম নীলফামারী জেলার চাপানী এলাকার নাজলী নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। এ খবর শুনে রেবিনা বেগম সন্তান রাহুলকে (৭) নিয়ে স্বামীর বাড়ি সামনে অনশন শুরু করেন।
রেবিনা বেগম বলেন, স্বামীর বাড়িতে আসলে আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। আমি আমার স্বামীর অধিকার নিয়ে এসেছি। আমার স্বামীকে ডিভোর্স দিইনি, তাই আমার অধিকার আছে। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হতেই পারে। তাই বলে আমার অনুমতি না নিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করতে পারে না। তাই আমি সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় বসে থাকব। সমাধান না পেলে সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করব।
এমদাদুলের মা আলেকজন নেছা বলেন, আমরা কেউ তাকে মারধর করিনি। ওই বউ মামলা করেছে তাই তাকে ঘরে উঠাব না। ওই বউ নিয়ে অনেক ঝামলা হয়েছে তাই ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়েছি।
তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এমদাদুল ইসলাম।
Advertisement
হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, মেয়ে পক্ষের কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রবিউল হাসান/এফএ/জেআইএম