গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমেছে। বাজার মূলধনের পাশাপাশি বাজারটির সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। তবে বেড়েছে গড় লেনদেনের পরিমাণ।
Advertisement
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৪৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা।
বাজার মূলধনের পতন হলেও গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনের অংশ নেয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার থেকে মাত্র একটি বেশি কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১৬৫টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ১৬৬টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির।
এদিকে মোটা অংকের বাজার মূলধন হারানোর পাশাপাশি সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৯ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৩৪ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ।
Advertisement
অপর দুটি মূল্য সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ১৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৩০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।
আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ১২ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪২৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ১১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১৭১ কোটি ২৬ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। মোট লেনদেন কমার কারণ গত সপ্তাহে ব্যাংক হলিডের জন্য এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
Advertisement
গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৮০ দশমিক ৩৭ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এছাড়া বাকি ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ ‘বি’, ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ ‘এন’এবং দশমিক ৫৩ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে রানার অটোমোবাইলের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৮২ শতাংশ।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ৪৫ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল পলিমার।
লেনদেনে এরপর রয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিঙ্গার বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, জেএমআই সিরিঞ্জ, জিনেক্স ইনফোসিস এবং বসুন্ধরা পেপার।
এমএএস/এসআর/পিআর