কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় মো. জুয়েল মিয়া (৩৪) নামে এক পোলট্রি ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভৈরব ট্রমা অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। জুয়েল ভৈরব পৌর এলাকার চণ্ডিবেড় গ্রামের হাজী আলাউদ্দিনের ছেলে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
এ ঘটনায় রোগীর স্বজনসহ ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ, র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন
রাত দেড়টা পর্যন্ত রোগীর স্বজনরাসহ উত্তেজিত জনতা হাসপাতালটি ঘেরাও করে রাখে। পরে রাত পৌনে ২টায় অভিযুক্ত চিকিৎসক কামরুজ্জামান আজাদকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ইমরান রোগীর অপারেশনের সময় অ্যানেস্থিসিয়া দিতে গিয়ে ভুল করেছেন। শুধু তাই নয় অ্যানেস্থিসিয়ার আগে রোগীর কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি। এ কারণে রোগীর মৃত্যু হয়।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে সিএনজি দুর্ঘটনায় জুয়েল মিয়ার ডান হাত ভেঙে যায়। তখন তাকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সে সময় তার হাতের ভেতর রড লাগানো হয়েছিল। সেই রডটি আজ হাত থেকে খুলতে তার অপারেশন করার সময় অর্ধশরীর অ্যানেস্থিসিয়া দেয়া হয়।
অপারেশন শুরু আগে তাকে অ্যানেস্থিসিয়া দেন ডা. ইমরান। অপারেশন করেন ডা. আজাদ। তাকে সহায়তা করেন সহকর্মী গৌরাঙ্গ বাবুসহ কয়েকজন। অ্যানেস্থিসিয়া দেয়ার পরপর তার হার্টবিট ও প্রেসার বেড়ে যায় বলে চিকিৎসকরা জানান। একপর্যায়ে অপারেশন থিয়েটারে মারা যান জুয়েল।
জুয়েলের বড় ভাই কামাল মিয়া বলেন, অপারেশনের জন্য ডা. কামরুজ্জামান আজাদকে ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তিনি রোগীর অপারেশনের আগে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেননি। তার ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা ডাক্তারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করব।
ডা. কামরুজ্জামান আজাদ বলেন, অপারেশনের আগে অ্যানেস্থিসিয়া দিয়েছেন ডা. ইমরান। হাফ বডি অ্যানেস্থিসিয়া দেয়ার পর আমি হাতের রড বের করে ফেলেছিলাম। কিন্ত হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তার মৃত্যু হয়।
Advertisement
তবে তিনি স্বীকার করেন অ্যানেস্থিসিয়া দিতে ভুলের কারণেই রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
ভৈরব সার্কেলের পুলিশের এএসপি রেজোয়ান দীপু বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ডা. আজাদকে থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা থানায় মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আসাদুজ্জামান ফারুক/বিএ