খেলাধুলা

বীরের বেশে বিদায় নেয়া হলো না মাশরাফির

কিংবদন্তিদের বিদায়টা এমন হয় কেন! যে মাশরাফি বিন মর্তুজা ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময়জুড়েই ছিলেন বাংলাদেশ দলের চোখের মনি। যার এক একটি পারফরম্যান্স উচ্ছ্বাসে ভেসে যেত টাইগার ড্রেসিং রুম। সেই মাশরাফিই তার শেষ বিশ্বকাপে ভীষণ নিষ্প্রভ, ঠিক যেন নিজের ছায়া।

Advertisement

অধিনায়ক হিসেবে হয়তো মাশরাফি এবারও বেশ ভালো নম্বর পেয়েই উৎড়ে যাবেন। সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ না হলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ জিতেছে। এর মধ্যে আবার একটি দল (দক্ষিণ আফ্রিকা) টাইগারদের থেকে র‍্যাংকিংয়েও উপরে। সে হিসেবে আধিনায়ক মাশরাফিকে ব্যর্থ বলা যাবে না।

মূলত সমালোচনাটা হচ্ছে খেলোয়াড় মাশরাফিকে নিয়ে। বাস্তবতা হলো, এবারের বিশ্বকাপের উইকেটগুলো ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। সেই স্বর্গে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষরা মাশরাফির ১২০-১২৫ গতির বলগুলো অনায়াসে খেলে ফেলবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, নড়াইল এক্সপ্রেসের কাছে যে পাহাড়সমান প্রত্যাশাটা কখনই কমে যাওয়ার নয়।

পারফরম্যান্স বিচারে তাই খেলোয়াড় মাশরাফিকে ব্যর্থই বলা যায়। পাকিস্তান ম্যাচের আগ পর্যন্ত ৭ ম্যাচে (বৃষ্টির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়) তার ঝুলিতে মাত্র ১টি উইকেট। ইকোনমিটাও সেই পরিচিত বোলিংয়ের নয়, ৭ ম্যাচের ৫টিতেই মাশরাফির ইকোনমি ছিল ছয়ের উপরে।

Advertisement

চোট সমস্যা তো তার পুরনো। মাশরাফি এবার সেভাবে ফিটও ছিলেন না। এই বিশ্বকাপে তিনি পুরো ১০ ওভার বল করতে পেরেছেন মাত্র একটি ম্যাচে। টুর্নামেন্টে নিজের একমাত্র উইকেটটিও পান ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচেই, তবে খরচ করে ফেলেছিলেন ৬৮ রান। বাকি ম্যাচগুলোর মধ্যে একবারও পুরো ওভারের কোটা পূরণ করেননি। কখনও ৫, ৬ কিংবা কখন ৭ ওভার পর ক্ষান্ত দিয়েছেন।

এত গেল বোলিংয়ের হালখাতা, এবার মাশরাফি ব্যাট হাতেও লোয়ার অর্ডারে কিছু করতে পারেননি। ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় যেমন মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য খ্যাতি ছিল, পরিচিতি ছিল দলের বিপদে টুকটাক রান করার জন্যও। সেই মাশরাফি এবার সাত ম্যাচে চারবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে একবারও দশের ঘর পেরুতে পারেননি। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ৮ রানের।

সবমিলিয়ে খেলোয়াড় মাশরাফি পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই ছিলেন সমালোচকদের ধনুকের লক্ষ্যবস্তু। বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচের আগেও তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই মহাতারকাকে নিয়ে সেভাবে আলোচনা নেই। 'শেষ ভালো' যে হলো না!

এমএমআর/এসএএস

Advertisement