নেত্রকোনার মদন উপজেলার কাইটাল ইউনিয়নের খাগুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোসাম্মৎ লক্ষু ভিক্ষা করে জীবন চালাচ্ছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী লক্ষুর বয়স ৯০ বছর। ৯০ বছর বয়সেও তার ভাগ্যে জাটেনি বয়স্কভাতা কিংবা বিধবাভাতার কার্ড। লক্ষু খাগুরিয়া গ্রামের মৃত কালাচাঁনের স্ত্রী।
Advertisement
জানা যায়, কাইটাল ইউনিয়নের খাগুরিয়া গ্রামের মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালান লক্ষু। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে গেছেন তিনি। এখন আর আকাশ দেখতে পান না, শুধু পা আর মাটি দেখেন লক্ষু।
সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্র অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বয়স্কভাতা ও বিধবাভাতা চালু করা হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় কোনো ভাতার কার্ডই তার ভাগ্যে জোটেনি।
বৃদ্ধা লক্ষু বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় সরকার নির্ধারিত বয়স্কভাতা কিংবা বিধবাভাতার কার্ড আমাকে দেয়া হয়নি। ফলে এই বয়সেও আমাকে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। আমার এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার সন্তোষের কাছে একটি বয়স্কভাতার কার্ডের জন্য বার বার গেছি। একটি কার্ডের বিনিময়ে আমার কাছে সাত হাজার টাকা দাবি করেছেন সন্তোষ মেম্বার। ভিক্ষা করে যেখানে আমার জীবন চলে না সেখানে মেম্বারকে সাত হাজার টাকা কোথা থেকে দেব আমি। পরে ইউপি চেয়ারম্যানকে বললেও কোনো পদক্ষেপ নেননি।
Advertisement
খাগুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া, রহিমা বেগম, কলি আক্তার জানান, জনসেবায় সরকারের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করতে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। বয়স্ক কিংবা বিধবাভাতার কার্ডের জন্য টাকা আদায় বা দাবি করা জনপ্রতিনিধিরা ওই চক্রের সদস্য। এদের আইনের আওতায় আনা দরকার।
বৃদ্ধা লক্ষুর প্রতিবেশীরা জানান, লক্ষুর এক ছেলে রয়েছে, কিন্তু সে মানসিক ভারসাম্যহীন। বাবার রেখে যাওয়া জমি-জমা প্রতারণা করে অন্যরা নিয়ে যাওয়ার পর থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে লক্ষুর ছেলে। ভিক্ষা করে সংসার চালান লক্ষু।
কামাল হোসাইন/এএম/এমকেএইচ
Advertisement