প্রবাস

মাদ্রিদে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের বনভোজন

প্রবাসে শত কর্মব্যস্ততার মাঝে গ্রীষ্মের ছুটির শেষে বাড়তি ঈদ আনন্দের সঙ্গে সবারই মনে ইচ্ছে জাগে নিজের এবং পরিবার আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে সমুদ্র-পাহাড়, খোলা আকাশ আর বাতাস উপভোগ করতে। তা যদি হয়ে উঠে ঘড়ির কাটার সঙ্গে সময়কে মেনে চলা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন স্পেনের উদ্যোগে সেটি হয়ে উঠে আরও উৎসবমুখর আনন্দের।

Advertisement

সম্প্রতি স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের অদূরে প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যে মোড়া পাহাড় আর ফলের আচ্ছাদিত প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম রাজ কাফ্রিয়ায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন স্পেনের উদ্যোগে দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় বার্ষিক বনভোজন।

সকালে মাদ্রিদ শহর থেকে ৮টি বাস এবং কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে একসঙ্গে বনভোজনের নির্ধারিত স্থানে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়। পথিমধ্যে সবাইকে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টায় বাস গন্তব্যে পৌঁছালে সেখানে প্রবাসীদের সঙ্গে যোগ দেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার, দূতাবাসের মিনিস্টার অ্যান্ড হেড অব দ্য চেঞ্চারি হারুন আল রশিদ, কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোহাম্মাদ নাভিদ সফিউল্লাহ।

এ সময় রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। বলেন, নবনির্বাচিত বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের এমন আয়োজন দেখে আমি অভিভূত। এখানে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে না যে, আমি দেশের বাইরে আছি। মনে হচ্ছে, আমি বাংলাদেশের কোথাও আছি। প্রবাসীদের এমন মিলনমেলা আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রবাসে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থে কাজ করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বানও জানান রাষ্ট্রদূত।

Advertisement

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লেক আর সবুজ পাহাড় ঘেঁষে বাংলা ভাষাভাষীদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। আয়োজকদের আন্তরিক আতিথেয়তায় সবাই মুগ্ধ হয়। দীর্ঘদিন পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা একে অপরকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে, মেতে ওঠে সুখ-দুঃখের আলাপনে, কেউ কেউ ঘুরে ঘুরে পার্কের রূপসুধা উপভোগ করতে থাকে।

শিশু-কিশোরদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। বনভোজনে অংশগ্রহনকারী বয়স্করাও বয়সের সীমাবদ্ধতা ভুলে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। সবস্তরের প্রবাসীদের উপস্থিতিতে পরিণত হয়েছিল এক টুকরো বাংলাদেশে।

বিভিন্ন ধরনের আনন্দ আয়োজন উপভোগ করতে করতে মধ্যাহ্ন ভোজের সময় হয়ে যায়। দুপুর গড়াতেই পরিবেশিত হয় দুপুরের খাবার। হরেক পদের মুখরোচক খাবার খেয়ে সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে থাকে। বনভোজনে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় শিশু-কিশোর-যুব ও নারীরা প্রাণ খুলে অংশগ্রহণ করে।

এ ছাড়া র‌্যাফেল ড্রতে ছিল আকর্ষণীয় পুরস্কারের সমাহার। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সভাপতি এনায়েতুল করিম তারেকের তত্ত্বাবধায়নে এবং পুননির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুন্দরের পরিচালনায় বনভোজনের অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।

Advertisement

বনভোজনে উল্লেখযোগ্যের মধ্যে ছিলেন বৃহত্তর ঢাকা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোহেল ভূইয়া, ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মো. ফজলে এলাহী, সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন, বিক্রমপুর মুন্সিগঞ্জে সমিতির সভাপতি মমিনুল ইসলাম স্বাধীন, ঢাকা জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান, কমিউনিটি নেতা নুর হোসেন পাটোয়ারী, লুৎফর রহমান, মোজাম্মেল হোসেন মনু, হেমায়েত খান, মোহাম্মদ বেলাল, ইসলাম উদ্দিন পংকি, আবুল হোসেন, আব্দুল কায়ূম মাসুক, আব্দুর রাজ্জাক, বাহার উদ্দিনসহ আরও অনেকে।

যাদের নিরলস প্রচেষ্টায় বনভোজনের কার্যক্রম সফল হয়, তারা হলেন- বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কাজী এনায়েতুল করিম তারেক, সিনিয়র সহ-সভাপতি আল আমিন মিয়া, সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম নয়ন, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুন্দর, যুগ্ম সম্পাদক মোরশেদ আলম তাহের, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, অর্থ সম্পাদক আবুল হাসেম মেম্বার, ধর্ম সম্পাদক আবু বক্কর, জালাল হোসাইন, মারুফ বিল্লাহ, হানিফ মিয়াজী, সায়েক মিয়া বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য নেতারা।

এক সময় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। এবার ফেরার পালা। মন কিছুতেই সায় দেয় না ফেরার। তবু ফিরতে হয়। সারাদিনের একরাশ সুখ স্মৃতি নিয়ে সবাই নিজ নিজ ঘরে ফেরে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এনায়েতুল করিম তারেক ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সপরিবারে বনভোজনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তা সফল করায় প্রবাসী বাংলদেশিদের ধন্যবাদ জানান।

কবির আল মাহমুদ, স্পেন/এমআরএম/জেআইএম