যারা জিতবে তারাই সেমিতে, পরাজিত দলের অপেক্ষা করতে হবে শুক্রবার পর্যন্ত- এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই চেস্টার লি স্ট্রিটে খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। আর এ ম্যাচে অপেক্ষাটা বেড়েছে নিউজিল্যান্ডেরই।
Advertisement
কিউইদের ১১৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের পর তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। নিজেদের সবকয়টি ম্যাচ খেলে ইংল্যান্ডের ঝুলিতে জমা পড়েছে ১২ পয়েন্ট।
সমান ম্যাচ খেলে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ১১ পয়েন্ট। তবু আশা শেষ হয়ে যায়নি কিউইদের। এখনও বেশ ভালোভাবেই সেমিতে খেলার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে গত আসরের ফাইনালিস্টদের।
শুক্রবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচে বাংলাদেশ জিতলে সরাসরি সেমিতে চলে যাবে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান জিতলে আসবে নেট রানরেটের হিসেব। যেখানে বেশ ভালো ব্যবধানেই এগিয়ে রয়েছে কেন উইলিয়ামসনের দল।
Advertisement
বুধবারের ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ডকে কোনো পাত্তাই দেয়নি ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট হাতে দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও জেসন রয়ের অসাধারণ নৈপুণ্যে ৩০৫ রানের সংগ্রহ এবং পরে বল হাতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিউইদের মাত্র ১৮৬ রানেই থামিয়ে দিয়ে ১১৯ রানের ব্যবধানে ম্যাচটি জিতেছে স্বাগতিকরা।
৩০৬ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি কিউইদের। মাত্র ১৪ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার হেনরি নিকলস (০) ও মার্টিন গাপটিল (৮)। তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেছিলেন দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলর।
কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে দুজনই কাঁটা পড়েন রানআউটে। রস টেলরের স্ট্রেইট ড্রাইভে ফলো থ্রুতে হাত ছোয়ান মার্ক উড, তা গিয়ে আঘাত হানে নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্ট্যাম্পে। তখন বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন উইলিয়ামসন। ফলে ভেঙে যায় ৪৭ রানের জুটি। কিউই অধিনায়ক ফেরেন ২৭ রান করে।
টেলর ফেরেন আদিল রশিদ ও জস বাটলারের যুগলবন্দীতে রানআউট হয়ে। দলীয় ৬৯ রানের মাথায় তিনি আউট হওয়ার আগে করেন ২৭ রান। এ দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পরেই মূলত আশা শেষ হতে থাকে নিউজিল্যান্ডের।
Advertisement
তবু আশার পালে হাওয়া দেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টম লাথাম। ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন তিনি। এছাড়া জিমি নিশাম ১৯ ও মিচেল স্যান্টনররা ১২ রান করলে পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমে শুধু।
ইংল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে মার্ক উড নেন ৩ উইকেট। এছাড়া জোফ্রা আর্চার, বেন স্টোকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদ ও ক্রিস ওকস নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন দুই ওপেনার জেসন রয় আর জনি বেয়ারস্টো। ১১২ বলে তারা গড়েন ১২৩ রানের ঝড়ো জুটি। ৬১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৬০ রান করা রয়কে ফিরিয়ে এই জুটিটি ভাঙেন জেমস নিশাম।
তারপরও ৩০তম ওভার পর্যন্ত বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড, রান ছিল ১ উইকেটে ১৯৪। ট্রেন্ট বোল্টের করা ৩১তম ওভারের প্রথম বলে ২৪ রান করে জো রুট আউট হওয়ার পরইে যেন মরক লেগে যায় ইংলিশ ইনিংসে।
পরের ওভারে ম্যাট হেনরির দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হন সেঞ্চুরিয়ান জনি বেয়ারস্টো। ৯৯ বলে গড়া ইংলিশ ওপেনারের ১০৬ রানের ঝড়ো ইনিংসটি ছিল ১৫টি চার আর ১টি ছক্কায় সাজানো।
এরপর জস বাটলার (১১), বেন স্টোকস (১১), ক্রিস ওকস (৪)-অল্প সময়ের ব্যবধানে ফিরে গেলে বিপদেই পড়ে ইংল্যান্ড। ২ উইকেটে ২০৬ রান থেকে ৬ উইকেটে ২৫৯ রানে পরিণত হয় স্বাগতিকরা।
তবে সতীর্থদের এই আসা যাওয়ার মাঝেও ৪০ বলে ৪২ রানের একটি ইনিংস খেলেছেন ইংলিশ দলপতি ইয়ন মরগান। আর শেষদিকে আদিল রশিদের ১২ বলে ১৬ আর লিয়াম প্ল্যাংকেটের ১২ বলে অপরাজিত ১৫ রানের দুটি ছোট ইনিংসে তিনশো পার করতে পারে স্বাগিতকরা।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি আর জেমস নিশাম।
এসএএস