গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় অটো স্পিনিং মিলসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রাসেল ও আনোয়ারের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
Advertisement
কারখানার নিরাপত্তাকর্মী রাসেল মিয়ার মঙ্গলবার ছিল ডে-অফ (বন্ধের দিন)। তিনি সকাল থেকেই বাসায় (কারখানার কোয়ার্টার) অবস্থান করছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের সংবাদে তিনি আর বাসায় থাকতে পারেননি। স্ত্রীর শত বারণ সত্ত্বেও সাধারণ পোশাকে ছুটে যান কারখানার ভেতর। অগ্নিকাণ্ডের ঘণ্টা খানেক পরেই স্বামীর মৃত্যুর খবর পান স্ত্রী মোকশেদা আক্তার।
নিহত রাসেল ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার হরিপুর মহালুল গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। বাবা আলাউদ্দিনের দুই ছেলে সন্তানের মধ্যে রাসেল মিয়া ছিলেন বড়। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা রাসেল গত ৫ বছর আগে এ কারখানায় নিরাপত্তাকর্মীর কাজ নেন। তবে দীর্ঘদিন কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করলেও সর্বশেষ নিজের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন তিনি।
রাসেল মিয়ার রত্না নামের ১৪ বছরের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক সন্তান রয়েছে। স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়েই ছিল তার সংসার। সন্তান ছোটকাল থেকেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী থাকলেও সন্তানের প্রতি ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না রাসেল মিয়ার। মায়ার বাঁধনে বাধা ছিল বাবা ও মেয়ের জীবন।
Advertisement
কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা নূরজাহান বেগম জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবরে রাসেল মিয়া উৎপাদন শাখায় প্রবেশ করে অন্যান্য শ্রমিকদের নিরাপদে বের করে আনতে কাজ করেন। এক সময় তিনি নিজেও আগুনে আটকে পড়ে টয়লেটে আশ্রয় নেন। পরে তার আর্তচিৎকারে টয়লেটের দেয়াল ভেঙ্গে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, রাসেল মিয়া যদি নিজের কথা ভাবতেন তাহলে ঘটনাস্থলে আসতেন না। তবে তিনি মানবিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাননি। অন্যের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মৃত্যুর পূর্বক্ষণ পর্যন্ত কাজ করেছেন।
শিহাব খান/এমএএস/এমএস
Advertisement