দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় ডায়রিয়ার তীব্র প্রকোপ

গাইবান্ধা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃহস্পতিবার ব্যাপক আকারে ডায়ারিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৮৫ জন গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া ইতোমধ্যে ৩০ জন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টা থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা হাসপাতালে আসতে শুরু করলেও বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টা থেকে শহরের পৌর এলাকার থানাপাড়া ও খানকা শরীফ এলাকার কলেজের ছাত্রছাত্রীদের দুটি মেসের বাসিন্দারা ব্যাপকভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করেন।এরপর থেকে ওই দুটি পাড়াসহ পশ্চিমপাড়া, কলেজ রোড, পলাশপাড়া, মাস্টারপাড়া, বানিয়ারজান ও গাইবান্ধা পৌর এলাকার অন্যান্য এলাকার ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করে।ডায়রিয়ায় আক্রান্ত পূর্ব থানা পাড়া শিলামনি ছাত্রী নিবাসের ছাত্রী নিপা আক্তার তিথি ও অন্য রোগীরা জানান, রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ার পর তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। তাদের ধারণা এ সকল এলাকার পৌরসভার সাপ্লাই ও টিউবওয়েলের পানি পান করে তারা রাত থেকে সকালের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। পানি খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই প্রচণ্ড পেট ব্যাথা, বমি ও অবিরাম পাতলা পায়খানা হতে শুরু করে।এ ব্যাপারে হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া ডায়রিয়ার প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা সম্ভব না হলেও রোগী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে শুনে এবং অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে টিউবওয়েল এবং সাপ্লাই এর পানি খেয়েই হঠাৎ করে এই ডায়রিয়ার প্রকোপ শুরু হয়েছে।হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা.আবুল আজাদ মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন, পানির উৎস যেটাই হোক না হোক না কেন বন্যার পানি কোনো কারণে এই সমস্ত উৎসে সম্পৃক্ত হওয়ার ফলেই পানি জীবানুযুক্ত হয়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আ. লীগ নেতা পিয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, তিনি মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন কিন্তু সেখানে একজন মাত্র নার্স ছাড়া কোনো চিকিৎসকের দেখা পান নি। রোগীদের স্যালাইনও কিনতে হয়েছে বাইরে থেকে।পরে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ, পৌরসভার মেয়র শামছুল আলম, যুবলীগ নেতা অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং তারা হাসপাতালের বিরাজমান অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা, প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও ওষুধের স্টক না থাকা, চিকিৎসকের অনুপস্থিতিসহ সার্বিক অব্যবস্থাপনায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন।এ সময় রোগীদের সঙ্গে আসা লোকজনও অব্যবস্থায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে পৌর মেয়র শামছুল আলম হাসপাতালে প্রয়োজনীয় স্যালাইন সরবরাহ করলে জরুরি চিকিৎসা অব্যাহত থাকে। জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদজিাগো নিউজকে জানান, হাসপাতালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে।অমিত দাশ/এসএস

Advertisement