প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বন্ড ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পেয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল)।
Advertisement
আজ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম. খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৬৯২তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন ৫ হাজার টাকা ইস্যু মূল্যের ২ লাখ বন্ড আইপিওতে ছেড়ে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। বন্ডটির বৈশিষ্ট্য নন-কনভার্টিবল, পূর্ণ অবসায়ন এবং কুপন বিয়ারিং।
পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলন করা টাকা কোম্পানিটি ভূমি উন্নয়ন ও সিভিল ওয়ার্ক, প্রাথমিক জ্বালানী, যানবাহন ক্রয়, প্রকৌশলী ও পরামর্শক সেবা, চলতি মূলধন এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে।
Advertisement
বিএসইসি জানিয়েছে, ৭ বছর মেয়াদি বন্ডটির বার্ষিক কুপন সুদহার হবে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদ হারের সঙ্গে ৪ শতাংশ মার্জিন যুক্ত হার, যা সর্বনিম্ন সাড়ে ৮ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ শতাংশ হবে। কুপন সুদ হার অর্ধবার্ষিক মেয়াদে প্রদান করা হবে।
কোম্পানিটিকে পুঁজিবাজারে আনতে ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। এ ছাড়া ট্রাস্টি হিসেবে রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
বিএসইসি জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য ২৬৫ টাকা ৯৬ পয়সা। আর বিগত পাঁচটি আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১০ টাকা ৬৩ পয়সা।
আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাওয়ার হাব। এর ৮টি ইউনিটের বর্তমান মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৬৯০ মেগাওয়াট। বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎখাত উন্নয়ন ও সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি ২০০০ সালের ২৮ জুন কোম্পানি আইন ১৯৯৪–এর অধীনে নিবন্ধিত হয়। এপিএসসিএল –এর নিবন্ধন নং ৪০৬৩০ (২৩২৮)/২০০০।
Advertisement
২০০৩ সালের ২২ মে বিপিডিবি এবং এপিএসসিএলের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সাময়িক বিক্রেতা চুক্তির মাধ্যমে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কমপ্লেক্সকে (সম্পদ ও দায়সহ) এপিএসসিএলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একই বছরের ১ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানির সকল কার্যক্রম শুরু হয়।
সেই সঙ্গে পাওয়ার স্টেশনের অপারেশন, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমসহ কোম্পানির সামগ্রিক কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক (প্রকৌশল), নির্বাহী পরিচালক (পিএন্ডপি) ও নির্বাহী পরিচালক (অর্থ)-এর সমন্বয়ে গঠিত ম্যানেজমেন্ট টিমের ওপর ন্যস্ত করা হয়।
কোম্পানির আর্টিক্যালস্ অব অ্যাসোসিয়েশন অনুযায়ী মোট শেয়ারের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ বিপিডিবি এবং অবশিষ্ট শেয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এনার্জি ডিভিশনের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
এই পাওয়ার স্টেশনে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয় এবং জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে ভোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এই পাওয়ার স্টেশন দেশের মোট চাহিদার ১৫ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সরবরাহ করা প্রাকৃতিক গ্যাস এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রধান জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এমএএস/এনএফ/জেআইএম