বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতির দুই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ-৩ এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের আদালত এ দিন ধার্য করেন।এর আগে বিএনপি নেত্রী বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছায় সকাল ১১টার কিছুক্ষন পরেই। তিনি আাদালতে পৌঁছার আগেই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সময়ের আবেদন করেন খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। পরে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রথম সাক্ষী এইচ এম ইসমাইলকে জেরা শুরু করেন খালেদার আইনজীবীরা। তার আগে সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর এ দুই মামলার শুনানি হলেও সেদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বেগম খালেদা। ওইদিন তার পক্ষে আইনজীবীরা হাজিরা দেন।ওইদিন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ট্রাস্টের মামলায় জব্দ তালিকার দুই সাক্ষী সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা ইনসান উদ্দিন আহমেদ ও ক্যাশ কর্মকর্তা শাহজাহান খানের জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।পরে অন্য তিন সাক্ষী পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র প্রধান কর্মকর্তা এস এম ইসমাইল এবং জনতা ব্যাংকের সাত মসজিদ শাখার মহাব্যবস্থাপক শেখ মকবুল ও ফাহমিদা রহমানের সাক্ষী গ্রহণ করা হয়।এর আগে মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ এবং এজহার গ্রহণকারী পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুল হক ভূঁইয়া এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ তবে তার জেরা বাকি রয়েছে।এর আগে দুই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১০ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেন আদালত। বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ওই দিন নির্ধারণ করেন।খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক হারুনুর রশীদ।ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক।মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।এফএইচ/এআরএস/পিআর
Advertisement