আইন-আদালত

‘বালিশকাণ্ড’ নিয়ে হাইকোর্টের রুল

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্রিন‌সি‌টি প্রক‌ল্পে সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটায় দুর্নী‌তি বিষ‌য়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে দুই সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

একই সঙ্গে, রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী, রাজশাহীর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

Advertisement

জনস্বার্থে দায়ের করা এ-সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সরওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।

আদেশের পর রিটকারী আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র বিশ্বস্ততার সঙ্গে (গুড ফেইথ) কেনা ও উত্তোলনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, ওই ঘটনায় করা দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল এবং প্রতিবেদন অনুসারে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেই বিষয়টি দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র কেনায় যাদের বিশ্বস্ততা দেখানোর কথা ছিল তারা সেখানে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। এবং এ ব্যর্থ হওয়াটা কেন অবৈধ বলে বিবেচনা করা হবে না-এ মর্মে আদালত রুল প্রদান করেছেন। সরকারপক্ষকে বলেছেন, ২ সপ্তাহের মধ্যে তারা কী প্রতিবেদন নিয়ে আসবেন এটা জমা দেয়ার জন্য এবং প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা-ও দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।’

Advertisement

এর আগে রিটের পর ২০ মে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ওই ঘটনায় গণপূর্তের করা দুটি তদন্ত কমিটির কথা উল্লেখ করে আদালতকে বলেন, ‘এরই মধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এ প্রতিবেদনটা আগে আসুক। তারপর যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সে পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখা যেতে পারে।’

এরপর আদালত স্ট্যান্ডওভার রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার (১ জুলাই) রিট আবেদনটি তালিকায় উঠে আসে। এদিন শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘কাজতো চলছে, কমিটির কাজ চলছে। ফেয়ার রিপোর্টের স্বার্থে আমাদের ১৪ জুলাই পর্যন্ত সময় দেন। কারণ ১২ জুলাই প্রতিবেদন দেয়ার পর আমাদের সেটা হলফনামা আকারে আদালতে জমা দিতে হবে। এ কারণে আরও দুইদিন মিলিয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সময় দেন।’

তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে এ বিষয়ে আদেশের জন্য মঙ্গলবার (২ জুলাই) দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন আদালত।

এফএইচ/এসআর/এমএস