প্রবাস

ফিলাডেলফিয়ায় রোহিঙ্গা শীর্ষক সেমিনার

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরে বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে ‘রোহিঙ্গাসহ শরণার্থীদের সমসাময়িক হুমকিসমূহ’ শিরোনামে আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ জুন সন্ধ্যায় ব্রিটস গ্লোবাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত সেমিনারে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

Advertisement

বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের মন্ত্রী নিলা টেইলর, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের সিনিয়র পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার ডানা সিলেইম্যান। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান হিমুর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন স্টিভেন বি প্যাক।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ফলে বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক, পরিবেশগত ও সামাজিক বিন্যাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারতা দেখিয়েছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়েরও এখন উচিৎ উদার ও কার্যকরভাবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা।‘

এক্ষেত্রে তিনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে এর দায়বদ্ধতার মুখোমুখি করা, মূল কারণ খুঁজে বের করে এর সমাধান করা, রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেফ জোন গড়ে তোলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

Advertisement

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইটসিআর) এর সিনিয়র পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার ডানা সিলেইম্যান বিশ্বের শরণার্থী সমস্যার বর্তমান পরিস্থিতি ও সমসাময়িক চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন। ইউএনএইচসিআর শরাণার্থীদের জন্য যে সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে করে তা উল্লেখ করেন তিনি।

শরণার্থী যে কোনো দেশের জন্যই একটি সমস্যা বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও শিল্পোন্নত দেশে শরণার্থী সঙ্কট মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করে বলে মন্তব্য করেন সিলেইম্যান। রোহিঙ্গাসহ বিশ্বের শরণার্থীদের সমস্যা সমাধানে এর মূল কারণ অনুসন্ধানের ওপর সর্বোচ্চ জোর দেন ইউএনএইচসিআর এর এই প্রতিনিধি।

আরটিভির সিইও আশিক রহমান রোহিঙ্গা সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা তুলে ধরার পাশাপাশি আরটিভির প্রযোজনায় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মিত ‘জন্মভূমি’ সিনেমার বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

Advertisement

ব্রিটস গ্লোবাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান হিমু বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী যে উদারতা দেখিয়ে চলেছেন তা বিশ্বে বিরল। আমি মনে করি বিশ্ব নেতৃত্বেও উচিত শেখ হাসিনাকে নোবেল পুরস্কার দিয়ে এই মহৎ কাজের স্বীকৃতি দেয়া। রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা কামনা করি।’

সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন মনোবিজ্ঞানী ড. ওচিমা পিটম্যানা, মানবাধিকার কর্মী জোসেফ হ্যারিস, ফিলাডেলফিয়ার ৬০ নং ওয়ার্ডের কমিটিম্যান গ্রেক থম্পসন, ফ্যাশান ডিজাইনার ও আর্টস অর্গানাইজার ভ্যানি তাওসাইন্যান্ট, টিন ইন্টারন্যাশনাল বিউটি সুজান কচ, আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ফটোগ্রাফার ও ডকুমেন্টারি ফিল্ম মেকার উলিসি টাওসাইনটিস, অভিনেত্রী-মডেল ও মানবাধিকার কর্মী ইভি ডমিনিকুই, শিশুতোষ লেখক ও সঙ্গীত প্রযোজক আলবার্ট রিড, সাউথ সুদানের সাবেক শরণার্থী বর্তমান মানবাধিকার কর্মী নায়ামাল টুডিয়াল।

২০ জুন ছিল আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস। সেমিনারে দর্শক হিসেবে ২০টি দেশের অন্তত দুইশত দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

এমআরএম