জাতীয়

ডাকলে চোখ খোলে শাহীন, তবে এখনও অচেতন

সাতক্ষীরায় দুর্বৃত্তদের আঘাতে মাথা ফেটে যাওয়া কিশোর ভ্যানচালক শাহীনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

Advertisement

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) শুয়ে থাকা শাহীনকে ডাকলে সে সাড়া দেয়, চোখ খোলে। তবে এখনও অচেতন সে, সজ্ঞানে আসতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

সকালে তার চিকিৎসায় গঠিত ৭ সদস্যদের মেডিকেল বোর্ড তাকে দেখতে আইসিইউতে যান। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী তার মাথার সিটিস্ক্যান করানো হয়।

আরও পড়ুন > শাহীনের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

Advertisement

বোর্ড চিকিৎসকরা জানান, খুলনায় তার যে সিটিস্ক্যান করানো হয়েছিল, সেই স্ক্যান থেকে আজকের স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো। হার্টবিট আগের চেয়ে একটি বেড়েছে।

সোমবার দুপুরে শাহীনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, ‘শাহীনের অবস্থা স্থিতিশীল। অবস্থার অবনতি হয়নি। সকালে আইইউতে গিয়ে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তাকে শাহীন বলে ডাকতেই সে চোখ মেলে তাকিয়েছে, আবারও ঘুমিয়ে পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সে যখন আঘাতের কারণে ক্ষেতে দীর্ঘক্ষণ পড়েছিল তার অনেক রক্তক্ষরণ হয়। এরপর আর হয়নি। এ ছাড়া এখন নতুন করে রক্তক্ষরণের কোনো আশঙ্কা নেই। অপারেশনের পর শারীরিক অবস্থার অবনতির আশঙ্কা থাকলেও সেটি হয়নি। আমরা তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করছি।’

এদিকে ঢামেকে আইসিইউয়ের বাইরে শাহীনের জ্ঞান ফেরার অপেক্ষা করছেন তার মা খাদিজা, চাচা মনসুর, খালু রবিউলসহ আত্মীয়-স্বজনরা।

Advertisement

আরও পড়ুন > আইসিইউতে সেই শাহীন

ছেলের এমন অবস্থায় তার মা কথা বলছেন না কারও সঙ্গে। শাহীনের চাচা মোহাম্মদ মনসুর জাগো নিউজকে বলেন, আমি অনেকবার শাহীনের রুমে গিয়েছি, তার জ্ঞান ফেরেনি। তবে ডাক্তাররা বলল, খুলনা থেকে যে অবস্থায় তাকে আনা হয়েছিল এখন তার চেয়ে শরীর ভালো। এ ছাড়া চিকিৎসকরা বলেছেন, তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। সে লড়ে যাচ্ছে।

এ পর্যন্ত শাহীনকে মোট ৫ ব্যাগ এবি-পজিটিভ রক্ত দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার যশোরের কেশবপুরের গোলাখালী মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহীন সকালে ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে রোজগারে বের হয়েছিল। দুপুরে দুর্বৃত্তরা ভ্যানটি ভাড়া নেয়। পরে ধানদিয়া গ্রামের হামজাম তলা মাঠে ঢুকে একটি পাটখেতের পাশে দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে সে। জ্ঞান ফিরলে কাঁদতে থাকলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়।

শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনার আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢামেকে আনা হয়।

শনিবার রাতেই তার মাথার অপারেশন সম্পন্ন হয়। অপারেশনের পর তাকে ৭২ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখার কথা বলেন চিকিৎসকরা। সোমবার ৩৬ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরেও জ্ঞান ফেরেনি তার।

ঢামেক চিকিৎসকরা জানান, শাহীনের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এআর/জেডএ/জেআইএম