ধর্ম

অবিশ্বাসীদের ভ্রান্ত ধারণা ও পরকালে পরিপূর্ণ কর্মফল বণ্টন

দুনিয়ার সব ইয়াহুদিই আসমানি কিতাবে বিশ্বাস করে। তারা তাদের কাছে প্রেরিত আসমানি কিতাব তাওরাতকে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করেছে। ইসলাম সম্পর্কে তাওরাতের বর্ণনার প্রতি তারা বিশ্বাস স্থাপন করেনি।

Advertisement

আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসী ও ইয়াহুদিদের প্রতি নিজেদের কিতাবের ব্যাপারে অবিশ্বাসের কথা তুলে ধরে উম্মাতে মুহাম্মাদিকে সতর্ক করেছেন। যারা ইচ্ছা করে সত্য গোপনে কিতাবের সুস্পষ্ট তথ্য গোপন করবে কিংবা এর বিরোধিতা করবে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি। যদিও তারা মনে করে যে, এ কাজের জন্য তারা মাত্র কিছু দিন আজাব ভোগ করবে।

এসবই ইয়াহুদিসহ অবিশ্বাসীদের ভ্রান্ত ধারণা। আল্লাহ তাআলা পরকালে প্রত্যেককেই তাদের পরিপূর্ণ কর্মফল প্রদান করবেন। কুরআনুল কারিমে এসব বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করে সে ঘটনাগুলো উল্লেখ করেছেন। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য শিক্ষণীয় বিষয়। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-

আয়াতের অনুবাদ

Advertisement

আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণসুরা আল ইমরানের ২১ ও ২২নং আয়াতে বনি ইসরাইলের নবিদের ও তাওহিদের অনুসারিদের অবিশ্বাস ও হত্যার কথা তুলে ধরেছেন আল্লাহ তাআলা। অতঃপর পরবর্তী ৩টি আয়াতে অবিশ্বাসী ইয়াহুদিদের নিজেদের ঈমান ও কিতাবের প্রতি অবিশ্বাস সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। এ সব কাজের তাদের পরিণতির ব্যাপারে তারা যে ধারণা পোষণ করতো সেগুলো সুস্পষ্ট করা হয়েছে।

আয়াত নাজিল প্রসঙ্গে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইয়াহুদিদের একটি দলের সঙ্গে তাদের পাঠশালায় যান এবং তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করেন।ইয়াহুদিদের মধ্য থেকে নুআইম বিন আমর ও হারেস বিন যায়েদ বিশ্বনবিকে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি কোন দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আমি ইবরাহিমের দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’তখন তারা দু’জন বলল, ‘ইবরাহিম তো ইয়াহুদি ছিলেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তা হলে তাওরাত নিয়ে আস! তা আমাদের মাঝে ফয়সালা করে দেবে।

Advertisement

তারা তাওরাত নিয়ে আসতে অস্বীকার করে। তখন এ আয়াত নাজিল হয়।’ (তাফসীরে মাজহারি, কুরতুবি, ফতহুল মাজিদ

আরও পড়ুন > পরকালে সর্বাধিক শাস্তি ভোগ করবে যারা

আসমানি কিতাবের দাবিদার তথা ইসলাম মুসলিম হওয়ার দাবি করে যারা ইসলামের দিক-নির্দেশনা কিংবা কোনো আসমানি কিতাব অনুযায়ী নিজেদের ফয়সালা মেনে নিতে অস্বীকার করে তাদের জন্য মহান আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন।

ইয়াহুদিসহ অবিশ্বাসীরা যদিও মনে করে যে তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য সামান্য কিছুদিন আগুণে অবস্থান করবে, আসলে বিষয়টি তা নয়, বরং এটিও তাদের মহা প্রতারণা।

ইসলামের অনুসারি কোনো মুসলমানের আক্বিদা বিশ্বাস এমন হতে পারে না, কিংবা আকাঙ্খা এমন হতে পারে না যে, তারা কিছুদিন জাহান্নামের আজাব ভোগ করবে, অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দেবেন।

বরং ঈমাদের আকঙ্খা হবে এমন যে, সে হবে পাপমুক্ত বিশুদ্ধ জীবনের অধিকারী। কুরআনের বিধান পালনেই মুমিন এ গুণ ও পরকালীন নাজাতে সিক্ত হবে।

সুতরাং ভাবনার বিষয়, পরকালে অবিশ্বাসী ইয়াহুদি কিংবা কুরআনের বিধান অমান্যকারীদের অবস্থা কিরূপ হবে তা অনুমেয়। যে দিনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। আর সেদিন সব মানুষকেই তার কর্মফল অনুযায়ী পরিপূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামকে মেনে নেয়ার মাধ্যমে পরকালের প্রতিদান দিবসে বিশুদ্ধ ও সফল জীবন লাভে পরিপূর্ণ কল্যাণময় কর্মফল লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ