যদিও তাদের নামের পাশে ১০টি করে উইকেট। কিন্তু ভক্তদের মন ভরেনি। এক কথায় অসন্তুষ্ট। কারণ বাঁহাতি মোস্তাফিজুর রহমান আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দীনের কেউই সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।
Advertisement
দুজনের কারো বলেই তেমন ধার নেই। লাইন-লেন্থের অবস্থাও বিশেষ ভালো না। অকারণে অপ্রয়োজনে লেগ মিডল ও লেগ সাইডে বল করার প্রবণতা দুজনারই। যে কারণে সমীহ জাগানো এবং রান নিয়ন্ত্রণ; কোনটাই খুব ভালো হয়নি।
সবচেয়ে বড় কথা, নতুন বলে কেউই প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারেননি। প্রাথমিক ব্রেক থ্রু আনার কাজটিও তেমন ভাবে হয়নি। এক কথায় বাংলাদেশের পেসাররা নতুন বলকেই সেভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ।
সাউদাম্পটনের রোজবোলে আফগানিস্তানের সাথে লো স্কোরিং গেমে একটু অনুকূল উইকেটেও পেসাররা ব্রেক থ্রু আনতে পারেননি। আফগান ওপেনিং জুটি ভাঙাসহ ম্যাচ ঘুরানো এবং বাংলাদেশের জয় নিশ্চিতের কাজটিও করেছেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান।
Advertisement
সামনে ভারত ও পাকিস্তানের সাথে ম্যাচ। যে দুই দলের ব্যাটসম্যানরা স্পিনে অনেক দক্ষ। বিশেষ করে ভারতীয়রা। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেল রাহুল আর মহেন্দ্র সিং ধোনিরা স্পিনে মাস্টার। তাদের বিপক্ষে পেস বোলিং কার্যকারিতা ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাও কঠিন। আর সবার একটাই কথা, ভারতের টপ অর্ডারে ভাঙন ধরানো ছাড়া ম্যাচ জেতা বহুদূর, ভারতীয়দের চাপে ফেলাই কঠিন। সেক্ষেত্রে যদি পেসাররা শুরুতে নতুন বলে ব্রেক থ্রু দিতে না পারেন, তাহলে রোহিত-কোহলিরা একবার জমে গেলে কিন্তু আর রক্ষা থাকবে না। আর তাই ভারতের সাথে ম্যাচের আগে যত কথা পেস বোলিং নিয়ে।
তবে টাইগারদের ফাস্ট বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ তেমন কোনো আশার বাণী শোনাতে পারেননি। এমন কথা বলতে পারেননি যে, আমাদের পেসাররা জায়গামত ঠিক জ্বলে উঠে দলকে প্রাথমিক ব্রেক উপহার দিবে। রোববার টিম হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজ দলের পেসারদের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তার কাছে যখন প্রশ্ন রাখা হলো-আপনি কি মোস্তাফিজ আর সাইফউদ্দীনের নতুন বলের বোলিং নিয়ে চিন্তিত?
জবাবে ওয়ালশ যা বললেন, তা শুনে মনে হয় না তিনি চিন্তিত,উদ্বিগ্ন। তার ব্যাখ্যা, ‘আসলে নতুন বলে পেসাররা বল করবে কিনা, তাদের বোলিং কার্যকরিতাই বা কেমন হবে , সেটা নির্ভর করবে মূলত পিচের ওপর।’
সে কারণেই বার্মিংহামের উইকেট সম্পর্কে পূর্ব ধারণা নিতে চান ওয়ালশ। তার কথা, ‘আমাদের আগে দেখতে হবে কোন ধরনের পিচে খেলা হচ্ছে। সেখানে নতুন বলে পেসারদের ভালো করার সম্ভাবনা কতটুকু, তা বুঝতে হবে।’
Advertisement
ওয়ালশের অনুভব, যদি পিচে টার্ন থাকে, তাহলে শুরুতে উইকেট পেতে হলে অবশ্যই স্পিনারদের দিয়ে বোলিং শুরুর কথা ভাবতে হবে। উইকেটের চরিত্র ও গতি প্রকৃতি বুঝতে ভারত ও ইংল্যান্ড ম্যাচ ভালোমত দেখার এবং পর্যবেক্ষণ করার কথা ভাবছেন ওয়ালশ। তবে নতুন বল যদি সুইং করে, তাহলে অবশ্যই পেসারদের দিয়ে বোলিং শুরুই হবে যুক্তিযুক্ত।
ওয়ালশ আরও বলেন, ‘আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনের। ঐ দিনে উইকেট কেমন ব্যবহার করে, তা বুঝে রণকৌশল ঠিক করাই আসল কাজ।’
প্রশ্ন ছিল, নতুন বলে আপনার পছন্দর জুুটি কে কে? আপনি কাকে দিয়ে নতুন বলে বোলিং করাতে চান? ওয়ালশের কূটনৈতিক জবাব, ‘আমরা সব পেসারকেই তৈরি থাকার কথা বলে দিয়েছি। যাতে করে যে কেউ নতুন বলে বল করতে পারে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘পেসারদের মধ্যে রুবেলও এক ম্যাচ খেলেছে। কাজেই পেসারদের যে কেউ নতুন বলে বল করতে পারে। আমরা তাদের সবাইকেই তৈরি রাখতে চাচ্ছি।’
দুজনের তুলনা করতে গিয়ে ওয়ালশ বলেন, ‘উইকেটে যদি সুইং থাকে আর বাতাসে বল সুইং করে, তাহলে সাইফউদ্দীন মোস্তাফিজের চেয়ে একটু বেশি সুইং পায়। তবে ফিজও (মোস্তাফিজ) ভালো রূপেই আছে। আর মাশরাফি সব সময়ই বল সুইং করাতে পারে। কাজেই আমার হাতে অপশন আছে। এখন দেখতে হবে নির্দিষ্ট দিনে উইকেটের অবস্থা কেমন থাকে।’
এআরবি/এমএমআর/এমএসএইচ