আন্তর্জাতিক

উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপে যেতে চায় আফগানরা

দারিদ্র্যপীড়িত জীবনমান আর তালেবান হুমকি পেরিয়ে একটু স্বস্তিতে বসবাস করতে চায় আফগানরা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী নেওয়ার বিষয়টি টেলিভিশনে দেখে উৎসাহিত হয়েছে আফগানরা। তাই অন্যান্য দেশের শরণার্থীদের মতো এখন তারা যেকোন মূল্যে ইউরোপে পাড়ি জমাতে চায়।কাবুলের পাসপোর্ট অফিসের সামনে বুধবার ভোরে ফজর নামাজ পড়ে লাইনে এসে দাঁড়িয়েছেন মিরাবি (২৮)। মনে মনে জপ করছেন আল্লাহর নাম। যে করেই হোক ভিসাটা তাকে পেতেই হবে। ইউরোপ যাওয়ার এ সুযোগ হারানো যাবে না কোনোভাবেই। শরণার্থীদের জায়গা দেবে ইউরোপ- এমন সংবাদ শুনে ছুটে এসেছে মিরাবির মতো হাজার হাজার আফগান। সিরিয়ার পর আফগানিস্তান থেকে দ্বিতীয় সর্বাধিক সংখ্যক শরণার্থী ইউরোপের পথে রয়েছে। সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক ও উত্তর আফ্রিকা থেকে এই ভয়াবহ অভিবাসী শরণার্থী স্রোতে ভূমধ্যসাগর আর বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো এখন হিমশিম খাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় সংকট মোকাবেলা করেনি ইউরোপ। বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপের দেশে পাড়ি দিতে বিপজ্জনক যাত্রায় শামিল হচ্ছে আফগানরা।আফগান যুবক মিরাবি বলেন, বন্যার বাঁধ খুলে গেছে। আমাদের ইউরোপ এটাই সুবর্ণ সুযোগ। মিরাবি আগে কুনার রাজ্যের একটি মার্কিন ঘাঁটিতে অনুবাদকের কাজ করতেন। ২০১২ সালে তালেবান কর্তৃক হত্যার হুমকি পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিবাসী ভিসায় (এসআইভি) আমেরিকায় পাড়ি দেয়ার একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে তিনি আছেন। তিনি বলেন, মার্কিন ভিসা যদি না পাই, তবে টাকা দিয়ে হলেও মানবপাচার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমি ইরান, তুরস্ক হয়ে জার্মানি পৌঁছাব। শুনেছি, জার্মানি সিরিয়ার শরণার্থীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আমি মনে করি, আফগানদেরও একটা ভালো সুযোগ থাকবে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংগঠনের (আইওএম) আফগান প্রধান রিচার্ড দানজিগার বলেন, আফগানিস্তান থেকে ইউরোপে দ্বিতীয় অভিবাসী তুফান আসছে। ইউরোপে পৌঁছানো অনেকের ছবি টিভিতে দেখে এরা উৎসাহিত হয়েছে। কিন্তু কত মানুষ যে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরেছে, সেই ব্যর্থতার কথা কেউ ভাবছে না।এদিকে আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই বুধবার বিদেশ যেতে ইচ্ছুক এক ভিড়ের কাছে গিয়ে বলেছেন, প্রিয় তরুণ আফগানরা, তোমরা দেশে থাক, তোমাদের জন্মভূমিকে গড়ে তোল। দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। তোমাদের এখানে থাকা দরকার। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানো ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪১২ জন অভিবাসীর মধ্যে ১৪ শতাংশই শুধু আফগান। সিরিয়ার পর তারাই সর্বাধিক।এআরএস/আরআইপি

Advertisement