সংসদ ভবনের নকশায় জিয়াউর রহমানের কবর নেই জানিয়ে তা সরিয়ে ফেলার যে কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তার তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে খেলবেন না। দেশের মানুষ তাকে কি পরিমাণ ভালোবাসে তার মৃত্যুর পরে জানাজায় দেখেননি। কবর সরানোর চেষ্টা হলে সাধারণ মানুষ অবস্থান গ্রহণ করবে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘মোজাম্মেলদের কাছে পাকিস্তানের করা নকশা এত পছন্দ হয়ে গেছে কেন? পাকিস্তানের করা ডিজাইন বাস্তবায়নের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে দিতে হবে? আপনাদের তো পাকিস্তানকে এত ভালোবাসার কথা নয়।’
রোববার (৩০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্রমিক দলের মানববন্ধনে এসব বলেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই নেতা।
প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসায়ীবান্ধব মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আপনারা যে বাজেট দিয়েছেন তা শ্রমিকবান্ধব নয়, কৃষকবান্ধব নয় এবং ব্যবসাবান্ধবও নয়। এ বাজেট ব্যবসায়ীবান্ধব। এতে যারা ব্যবসা করে তাদের মুনাফা বৃদ্ধি পাবে। কোনো কাজে আসবে না। কারণ এ বাজেট বিদেশে পাচার হয়ে যায়। বিএনপির সুইস ব্যাংকে রাখার অর্থ নেই। সবকিছু লুটপাট করার জন্যই ব্যবসায়ীবান্ধব বাজেট দিয়েছেন আপনারা, যাতে শ্রমিকের কোনো কল্যাণ নেই, কৃষকদের কল্যাণ নেই।’
Advertisement
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। সেই টাকা সুইচ ব্যাংকে জমা হয়েছে কিনা তা তিনি দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি সাধারণ জিনিস ভুলে যান। আপনি বলবেন, আর মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে? কিন্তু এই অর্থবছরে কত টাকা পাচার হয়েছে সেই রিপোর্ট তো এখনো প্রকাশ হয়নি। আর যে টাকা পাচারের রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে সেটা কোন মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা? সেই রিপোর্ট আপনারা প্রকাশ করছেন না কেন?’
নজরুল বলেন, ‘গত ১০ বছরে ৪০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব কাদের টাকা? জনগণ ও বাংলাদেশের টাকা। এই টাকা কারা পাচার করলো? সে বিষয়ে তো আপনি কোনো খোঁজ নিচ্ছেন না। আপনি একটি রিপোর্ট দিলেন, ৩০০ আসনে মনোনয়ন বাণিজ্য করলে কত টাকা পাওয়া যেতে পারে?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বগুড়ার-৬ (সদর) আসনে উপনির্বাচনের জয় নিয়ে আমরা অবাক হইনি। কারণ ওই আসনে বিএনপির যে নির্বাচন করেছে সেই নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু আজকে পত্রিকায় দেখলাম, যেখানে মোট ভোটের অর্ধেক ভোট পড়েনি, সেখানে কোনো কোনো কেন্দ্রে ৯৭-৯৮ শতাংশ ভোট দেখানো হয়েছে। এমনকি ১০০ শতাংশও ভোট দেখানো হয়েছে! তাই যে যন্ত্র দিয়ে এটা যোগ-বিয়োগ করা হয়েছে, সেই যন্ত্র দিয়ে কাজ হবে না।’
নেতাকর্মীদের গ্রেফতার নিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আন্দোলন বন্ধ করা যায় না তা আপনারাই তো ভালো জানেন। ৬ দফার পর বহু নেতা গ্রেফতার হয়। কিন্তু ’৭০ এর নির্বাচনে কি আপনাদের হারাতে পেরেছে? আজও একটি নির্বাচন দিয়ে দেখুন না, কীভাবে আপনারা বিএনপির কাছে হেরে যান দেখবেন।’
Advertisement
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান সরোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমআরএম/এমকেএইচ