৮ লাখ টাকা চুক্তিতে জনৈক ব্যক্তিকে টয়োটার একটি এলিয়ন মডেলের গাড়ি সরবরাহের কথা ছিল ছিনতাইকারীদের। পরিকল্পনা অনুযায়ী এলিয়ন গাড়ি পেতে উবারের রাইড রিকোয়েস্ট এক-দুবার নয়, পাঁচৎবার কল করেন এলিয়েন মডেলের গাড়ি পেতে।
Advertisement
গাড়িটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশে রামপুরায় নিজ বাসার ছাদে পরিকল্পনা সাজান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান। পরে উত্তরা ১৪ নং সেক্টরে পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ জুন গলা কেটে হত্যা করা হয় উবার চালক আরমানকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ কর্তৃক উবারের চালক আরমান (৪০) হত্যার ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারা হলেন- সিজান (২৪), শরিফ (১৯) ও সজীব (২০)। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শনিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
Advertisement
পরবর্তী সময়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি সুইচ গিয়ার চাকু ঘটনাস্থলের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
রোববার দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন বলেন, টার্গেট ছিল একটি টয়োটা এলিয়ন মডেলের গাড়ি ছিনতাই করা। টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছিল রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের গাড়ি। পরিকল্পনা অনুযায়ী এলিয়ন গাড়ি পেতে উবারের রাইড রিকোয়েস্টে এক-দুবার নয়, পাঁচবারের চেষ্টায় পেয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত এলিয়ন মডেলের গাড়ি।
ঘটনা সম্পর্কে ডিবি প্রধান জানান, গত ১৩ জুন রাত ১২টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নং রোডের ৫২ নং বাড়ি সামনে গাড়ির মধ্যে চালক আরমানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উত্তরা জোনাল টিম ছায়া তদন্তে নামে। তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, উবার চালক আরমান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান এবং তার সঙ্গে ছিল শরিফ ও সজীব। মামলাটি বর্তমানে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগে তদন্তনাধীন।
Advertisement
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, সিজান আগেও গাড়ি ছিনতাই করেছে। জনৈক ব্যক্তিকে ৮ লাখ টাকায় এলিয়ন মডেলের গাড়ি সরবরাহে চুক্তি হয়। এরপর এলিয়ন গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশে সিজান রামপুরায় অবস্থিত তার বাসার ছাদে শরিফকে নিয়ে পরিকল্পনা সাজান। এক পর্যায়ে তাদের পরিকল্পনায় সজীবকে যুক্ত করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ জুন নিউমার্কেট থেকে দুটি সুইচ গিয়ার চাকু কেনে তারা। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে সিজান উবারের মাধ্যমে কল করলে গাড়িটি এলিয়ন না হওয়ায় কল বাতিল করে দেয়। এভাবে পঞ্চম চেষ্টায় পেয়ে যায় উবার চালক আরমানের এলিয়ন মডেলের গাড়িটি। গাড়িতে তারা উত্তরার উদ্দেশে রওনা হয়। উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নং রোডে নিরিবিলি স্থানে গাড়িটি থামাতে বলে। গাড়ির ভাড়া পরিশোধ না করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে রাত ১২টা ৩৭ মিনিটের দিকে চারদিকে নিরাপদ মনে করে সিজানের ইশারায় চালক আরমানের পেছন ছিটে বসা শরিফ আরমানের মাথার চুল পিছনের দিকে টেনে ধরে চাকু দিয়ে গলা কেটে গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরবর্তী সময়ে আশপাশে পরিবেশ অনুকূল না হওয়ায় আরমানের মরদেহসহ গাড়িটি রেখে তারা পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এলিয়ন মডেলের প্রাইভেটকার ছিনতাই করার উদ্দেশেই তারা উবার চালক আরমানকে গলা কেটে হত্যা করেছে বলে জানায়।
জেইউ/জেএইচ/জেআইএম