কৃষি ও প্রকৃতি

ধানের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে পান চাষ

জয়পুরহাটে দিন দিন বাড়ছে পান চাষ। ধান, আলুসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে পান চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন পান চাষে। জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বেশকিছু গ্রামের মাঠে নিজ মেধা ও উদ্যোগে পান চাষ করে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষকরা। বিঘাপ্রতি পানের বরজে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করে পরবর্তী বছর থেকে প্রতি বছর লাভ করছেন ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা।

Advertisement

তবে জেলায় পান বিক্রির নির্ধারিত কোন পাইকারি হাট বা বাজার নেই। ফলে পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলায় পান বিক্রি করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পান চাষিদের। জেলায় লাভজনক ফসল পানের চাষ বাড়াতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা কৃষি বিভাগ।

আরও পড়ুন > নড়াইলে ধনিয়া চাষ বেড়েছে ৩ গুণ

পাঁচবিবির বাগুয়ান এলাকায় পূর্বপুরুষের পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে পবিত্র বর্মন, অতুল চন্দ্র, মিলন চন্দ্র, ধিরেন রায়, কমল চন্দ্র, সুশীল কুমার, নিমাই রায়, বিনয় রায়, উত্তম সাহা, কানাইলাল, নয়ন, মদনলালরা দীর্ঘদিন ধরে পান চাষ করে যাচ্ছে। তাদের সফলতায় হাজীপুরের মোস্তাফিজুর, লুৎফর রহমান, হাটখোলার মুক্তিয়ারসহ সীমান্তঘেঁষা চেঁচড়া, সালুয়া, ত্রিপুরা, রতনপুর, আটাপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা পান চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

Advertisement

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবিঘা জমির পানের বরজে মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি, শ্রমিক, পানের লতাসহ ১ লাখ টাকা প্রাথমিক অবস্থায় খরচ হয়। পরের বছর থেকে খরচ খুবই সামান্য হয়। কারণ একটি পানের বরজ তৈরি করার পর মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি সংস্কার ছাড়া ৪০-৪৫ বছর পর্যন্ত পানের বরজ অক্ষুণ্ন থাকে। সেখান থেকে পান পাওয়া যায়। বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত পানের ভড়া মৌসুম। ভাদ্র থেকে মাঘ পর্যন্ত পানের উৎপাদন কম হয়। ফাল্গুন মাসে বাড়ন্ত লতিকে নিচে নামিয়ে দেওয়াতে পানের উৎপাদন হয় না বললেই চলে। একটি পানের বরজ থেকে উৎপাদন বেশি হলে ২ পোয়া (১২৮টি) পর্যন্ত পান পাওয়া যায়। বড় পান পুরাতন ১ পোয়া ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা, মাঝারি পান ১ পোয়া ১ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে ২ হাজার ৫শ’ এবং ছোট পান ৫শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

আরও পড়ুন > পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকের মাথায় হাত

হাজীপুরের লুৎফর রহমান, হাটখোলার মুক্তিয়ার ও বাগুয়ানের পবিত্র বর্মন জানান, তাদের পান বিক্রির জন্য জেলায় নির্ধারিত কোন পাইকারি হাট-বাজার নেই। ফলে পার্শ্ববর্তী জেলা দিনাজপুরে পান বিক্রি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ার পাশাপাশি পান বিক্রিতে খরচও হয় বেশি হয়। তাই জেলায় একটি পানের হাট বা বাজার সৃষ্টির দাবি কৃষকদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ২৫০ বিঘা জমিতে পান চাষ হয়েছে। পান চাষে আরও আগ্রহী করতে আধুনিক এবং প্রযুক্তিগত সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’

Advertisement

রাশেদুজ্জামান/এসইউ/জেআইএম